এ বার শিলচর বা করিমগঞ্জ, কোনওটিতেই প্রার্থী দিচ্ছে না সিপিএম।
ভোট তলানিতে। তাই সিপিএম এ বার বরাক উপত্যকার কোনও আসনে প্রার্থী দিচ্ছে না। দলের কেউ বলছেন, ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতিতে তাঁরা এখন ব্রাত্য। আবার কেউ বলছেন, লড়াই থেকে সড়ে যাওয়ারই ফল এটা। এক সময় শিলচর আসন থেকে সিপিএম লোকসভায় প্রতিনিধিত্ব করেছে। ১৯৯৯-এ শিলচর ছেড়ে দিয়েছিল তারা। সে বার করিমগঞ্জ আসনে কুশিকান্ত দাসকে দাঁড় করিয়েছিল। এ বার শিলচর বা করিমগঞ্জ, কোনওটিতেই প্রার্থী দিচ্ছে না তারা। সিপিএমের কাছাড় জেলা কমিটির সম্পাদক দুলাল মিত্র বলেন, রাজ্য কমিটি দুটি আসনে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোকরাঝাড়ের অন্তর্গত সরভোগ, ভবানীপুর প্রভৃতি অঞ্চলে সংগঠন মজবুত রয়েছে। আর শিলচরের চেয়ে লখিমপুরে ভাল ফল আশা করা হচ্ছে। সে জন্য কোকরাঝাড় ও লখিমপুরে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।
১৯৭৪ সালে উপনির্বাচনে জিতে শিলচর থেকে লোকসভায় গিয়েছিলেন সিপিএমের নুরুল হুদা। ১৯৯১ সালেও তিনি ১ লক্ষ ৯৩ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। ১৯৭৮ সালে উপত্যকায় দলের ৪ জন বিধায়ক হন। এর পরে আর কেউ সিপিএমের টিকিটে জেতেননি। তবে বিভিন্ন আসনে তারা নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হন। করিমগঞ্জ সংসদীয় আসনটি সিপিএম কখনও জিততে পারেনি বটে, কিন্তু ১৯৭১ ও ১৯৮০ সালে দ্বিতীয় স্থানে ছিল।
নুরুল হুদা ছাড়াও অসম থেকে লোকসভায় যান সিপিএমের উদ্ধব বর্মণ। বরপেটা আসনে তিনি দু’বার জেতেন। সেখানেও দল প্রার্থী দিচ্ছে না এ বার। সিপিএমের ভোট ক্রমাগত কমে আসাই এমন সিদ্ধান্তের কারণ। কেন কমছে ভোট? দলের নেতাদের একাংশ বলছেন, ভোট এখন আর চিন্তাভাবনা, প্রার্থীর গুণাগুণ বিচারে হয় না। রাজ্যে চলছে হিন্দু-মুসলমানের মেরুকরণ। সেখানে সিপিএম ব্রাত্য। অন্য অংশের দাবি, লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্যই ভোট কমেছে। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা শিলচর আসনকেই তুলে ধরেন। সিপিএম এখানে ১৯৯৬-এ ২১.৭% ও ১৯৯৮-এ ২৭.৮% ভোট পেয়েছিল।১৯৯৯ সালে নির্দলকে সমর্থন জানায়। ওই ভোট আর ফিরে আসেনি। ২০০৪-এ নুরুল হুদা মাত্র ৩.৩% ভোট পান। আর উঠে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি সিপিএমের।