কাটা আঙুল দেখাচ্ছেন পবন কুমার। ছবি: টুইটারের ভিডিয়ো থেকে নেওয়া
বিএসপি। বিজেপি। মাঝখানের অক্ষরটি কেটে বাদ দিলে বাকিটা এক। কিন্তু রাজনীতির ময়দানে সেই পার্থক্য পাহাড়প্রমাণ। সামান্য ভুলেও ঘটে যেতে পারে বিরাট ‘বিপর্যয়’। উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের বাসিন্দা পবন কুমারও সেই ফারাকটা বোঝেন। তবু ভুলটা করেই ফেলেছিলেন বুথের ভিতরে ইভিএমের সামনে দাঁড়িয়ে। ‘বিএসপি’র বদলে টিপে দিয়েছিলেন ‘বিজেপি’র বোতাম। আর তার জন্য নিজেই ‘শাস্তি’ দিলেন নিজেকে। বুথ থেকে ফিরে কেটে ফেললেন নিজের আঙুল।
এ বার লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি), সমাজবাদী পার্টি (এসপি) এবং রাষ্ট্রীয় লোকদল (আরএলডি) একজোট হয়ে লড়াই করছে। বুলন্দশহর কেন্দ্রে এসপি এবং আরএলডি সমর্থিত বিএসপি প্রার্থী হয়েছেন যোগেশ বর্মা। উল্টো দিকে বিজেপির প্রার্থী ভোলা সিংহ। এই কেন্দ্রেরই শান্তিপুর থানার আবদুল্লাপুর-হুলাসপুর গ্রামের বাসিন্দা পবন কুমার বরাবরই বিএসপি সমর্থক। গতকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় বুলন্দশহরেও ভোট হয়েছে। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে ভোট দিয়েছেন পবন কুমারও।
কাকে ভোট দিয়েছেন? পবন কুমারের সম্বিত ফিরেছে ইভিএমের বোতাম টেপার পর। দিতে চেয়েছিলেন বিএসপির প্রার্থী ভোলা সিংহকে, হাতি চিহ্নে। কিন্তু ভোটে দিয়ে ফেলেছেন পদ্মফুল চিহ্নে, বিজেপির প্রার্থী ভোলা সিংহকে। এই ‘পাপবোধ’ই যেন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল পবন কুমারকে। ভোট দিয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসেন। যে আঙুল ভুল করেছে, তাকেই শাস্তির তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত। এবং সঙ্গে সঙ্গে কাজ, বাঁ হাতের তর্জনির মাথা থেকে কেটে বাদই দিয়ে ফেলেছেন।
আরও পড়ুন: সাধ্বী প্রজ্ঞার প্রার্থিপদ বাতিল চেয়ে মামলা এনআইএ আদালতে
আরও পড়ুন: উত্তপ্ত চোপড়ায় কাঁদানে গ্যাস, কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায়, প্রশ্ন বিরোধীদের
রক্তারক্তি কাণ্ড জানতে পেরে পরিবারের লোকজন প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি। হাতে ব্যান্ডেজ করে আর ওষুধপত্র দিয়ে ছুটি দিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ঘটনার একাধিক ভিডিয়ো ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে ক্যামেরার পিছনে থাকা এক ব্যক্তির প্রশ্নের উত্তরে হাতে ব্যান্ডেজ নিয়ে ঘটনার কথা নিজেই বলেছেন পবন কুমার। আবার পাড়া প্রতিবেশীরা বলছেন, আঙুল এমন ভাবে কেটেছেন পবন যে, প্রায় দু’ভাগ হয়ে আলাদা হয়ে গিয়েছে।
তাড়াহুড়ো, ভোট দেওয়ার উত্তেজনা, ক্ষণিকের স্মৃতিবিভ্রম, নাকি অন্য কিছু? সেই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর অবশ্য এখনও খুঁজেই চলেছেন পবন। তবে এটা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কারও চাপে এই কাণ্ড করেননি। নেহাতই ভুল করেই ভুল প্রতীকে ভোট দিয়েছেন তিনি।