ছবি: পিটিআই।
গোটা দেশ জুড়ে নরেন্দ্র মোদীর ঝড় চলছে— খোদ প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিজেপির ছোট-মেজ-বড় নেতারা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এটাই প্রচার করে আসছেন। তা সত্ত্বেও ভোটের প্রচার শেষ হওয়ার পরেও প্রধানমন্ত্রীর ‘প্রচার’ কী ভাবে ধরে রাখা যায়, তা নিয়ে এখন ভাবতে শুরু করেছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নিজেও এখন অটল-জমানা স্মরণ করে জোটের কথা বলতে শুরু করেছেন।
রাহুল গাঁধী-প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরারা প্রায় রোজই বলেন, আজও বলেছেন— প্রধানমন্ত্রী এদিক-ওদিক নানা কথা বলে বেকারি, কৃষক দুর্দশা, বেহাল অর্থনীতি, দুর্নীতি বা রাফালের মতো মৌলিক বিষয়গুলি থেকে লাগাতার নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু দেওয়াল লিখন স্পষ্ট, বিজেপি সরকারের বিদায় নিশ্চিত। এই অবস্থায় আজ বিজেপির মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর ছ’দফার ভোট শেষে দাবি করলেন, বিজেপি একাই পাচ্ছে তিনশো আসনের বেশি। এনডিএ-র শরিকদের নিয়ে সংখ্যাটা সাড়ে তিনশোয় পৌঁছবে।
ক’দিন আগেই বিজেপি নেতা রাম মাধব বলেছেন, একার জোরে এ বার বিজেপি সরকার না-ও গড়তে পারে। এমন এক পরিস্থিতিতে খোদ প্রধানমন্ত্রীও এখন জোটের কথা বলতে শুরু করেছেন। বিরোধীদের যে জোটকে তিনি ‘মহাভেজাল’ বলে নিত্য দিন কটাক্ষ করেন, ইউপিএ সরকারকে একডজন লোকের রিমোট কন্ট্রোল সরকার বলে বিদ্রুপ করেন, সেই প্রধানমন্ত্রীই এখন কথায় কথায় জোটের কথা বলছেন! বাজপেয়ীর জমানার কথাও টেনে আনছেন। মোদী বলছেন, ‘‘বিজেপি জোট চালাতে জানে। সংগঠনের দায়িত্বে থাকার সময় আমিও বিভিন্ন রাজ্যে জোটের সঙ্গে কাজ করেছি। আর বাজপেয়ীজির জমানায় জোট সরকার চালানোর ঐতিহ্য তো আছেই।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই দুশোর বেশি জনসভা করে ফেলেছেন। কয়েক একেক দিনে তো পাঁচটি পর্যন্ত সভাও করেছেন। কিন্তু তার পরেও চিন্তা যাচ্ছে না বিজেপির। সে কারণে এখন প্রধানমন্ত্রীকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কী ভাবে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে ভাবছে তারা। দলের এক সূত্রের মতে, ১৯ মে। শেষ দফার ভোটের প্রচার শেষ হয়ে যাবে ১৭ মে। শেষ দু’দিনেও প্রধানমন্ত্রীকে প্রচারের আলোয় রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। একটি বিকল্প হল কেদারনাথ, বদ্রীনাথ দর্শন। উত্তরাখণ্ডে ভোট হয়ে গেলেও শেষ দফায় ভোট হিমাচল, পঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশের কয়েকটি আসনে। ফলে মোদীর এ ধরনের কোনও ‘ধার্মিক’ সফর নিয়ে প্রচার করলে যেমন হিন্দুত্বকে উস্কে দেওয়া যাবে, তেমনই বকলমে সেরে ফেলা যাবে নিঃশব্দ প্রচারও।