ছবি: এএফপি।
সকালে ছিল গাঢ় নীল। বেলা গড়াতেই পাগড়ির রং বদলে গেল বাসন্তী হলুদে। অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে প্রার্থনা সেরে আজই গুরুদাসপুরের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন সানি দেওল। তার পর গুরুদাসপুরেই একটা সভা সেরে ভোট দিতে উড়ে গেলেন মুম্বইয়ে। ব্যস্ত ধর্মেন্দ্র-পুত্র সানি। মনোনয়ন পত্র জমার দিনে তবু নানা মহলে দিনভর আলোচনা চলল শুধু তাঁর পাগড়ি নিয়েই!
গত কালও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎপর্বে তাঁকে দেখা গিয়েছিল পাগড়ি-ছাড়া। আজ কি তবে দিন বুঝেই সানির এই পাগড়ি-সাজ? ভোটাদাতাদের মনে ‘গদর/বর্ডার’-এর স্মৃতি উস্কে দিতে চাওয়া— সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই সেই প্রশ্ন তুললেন। হয়ত কাকতালীয়, তবু নেটিজ়েনেরই একাংশের দাবি— মনোনয়ন পত্র জমা দিতে গিয়ে সানির নীল পাল্টে ভগৎ সিংহের প্রিয় রং বাসন্তী পাগড়ি-ধারণও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
সাত দিনও হয়নি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন সানি। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ ইতিমধ্যেই তাঁকে ‘ফিল্মি ফৌজি’ বলে কটাক্ষ করেছেন। প্রয়াত বিনোদ খন্নার চার বারের জেতা আসন গুরুদাসপুরে ভোটে দাঁড়ানোটা তাই সানির কাছে এমনিতেই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। অন্য দিকে, সানির টিকিট পাওয়া নিয়ে দলের প্রতি ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন বিনোদের স্ত্রী কবিতা খন্না। তাই কংগ্রেসের প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ সুনীল জাখরকে হারানোর পাশাপাশি খন্না পরিবারের মন জয় করাটাও সানির কাছে এখন যুদ্ধেরই মতো। আজ অবশ্য কবিতা দাবি করেছেন, ‘‘বিজেপি যোগ্য লোককেই প্রার্থী করেছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আজ দিনভর অবশ্য তাঁকে দেখা গেল ফুরফুরে মেজাজেই। স্বর্ণমন্দিরে প্রার্থনা সেরে ভাই ববি দেওল এবং পঞ্জাবের শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েক জন বিজেপি নেতাকে নিয়ে গুরুদাসপুরে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যান সানি। ধর্মেন্দ্র যাননি। সম্ভবত বাড়ি থেকেই ছেলের জন্য ভোট চাইলেন টুইটারে। লিখলেন, ‘‘আপনাদের সবার সমর্থন চাই। সানি জিতলে সেই জয় হবে আপনাদেরই, গোটা গুরুদাসপুরের জয়।’’ এ দিনই বিহারের পটনা সাহিব কেন্দ্রে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন বিজেপি ছেড়ে হালে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া তারকা প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হা।
শত্রুঘ্নের লড়াইটা মূলত বিজেপি প্রার্থী রবিশঙ্কর প্রসাদের বিরুদ্ধে। তবে পটনা সাহিব নয়, ‘বিনোদ-ভূমি’-তে সানির কী হাল হয়, তা নিয়েই যেন বেশি কৌতূহলী দেখাল সোশ্যাল মিডিয়াকে। সেখানে আজ দিনভর আলোচনা চলল তাঁর পেশ করা হলফনামা নিয়েও। যেখানে ‘সানি দেওল’ নামের উল্লেখ শুধু প্রার্থীর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে। আদতে তিনি অজয় সিংহ ধর্মেন্দ্র দেওল। এত দিন কাগজে-কাগজে তাঁর বয়স ৬২ লেখা হচ্ছিল। আজ হলফনামায় জানা গেল, সানি এখন ঊনষাট। সানিকে ‘তরুণ অভিনেতা’ বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলড হয়েছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আজ ঠাট্টা হল সানির বয়স নিয়েও।