নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ মায়াবতীর। —ফাইল চিত্র
লোকসভা ভোট যত শেষের দিকে এগোচ্ছে, বেড়েই চলেছে রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি। অলওয়ার গণধর্ষণ নিয়ে মায়াবতীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার জবাবে আগেও রাজনৈতিক ভাবে মোদীকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন মায়াবতী। কিন্তু সোমবার ফের সেই ইস্যুতেই মোদীকে নজিরবিহীন ভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বসলেন মায়াবতী। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘বিজেপি নেত্রীরা তাঁদের স্বামীকে মোদীর আশেপাশে দেখলেই আঁতকে ওঠেন। তাঁরা ভয় পান এই বুঝি মোদী নিজের মতো তাঁদেরও বিবাহবিচ্ছেদ করে দেবেন।’’ মায়াবতীর এই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজেপি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারামণের দাবি, মায়াবতীকে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্য দিকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি পাল্টা কটাক্ষ, জনসমক্ষে বেরনোরই অযোগ্য মায়াবতী।
গত ২৬ এপ্রিল অলওয়ারে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে পিছনে বসিয়ে নিয়ে বাইকে যাচ্ছিলেন। রাস্তায় দু’টি বাইকে চার জন তাঁদের পথ আটকায়। রাস্তার পাশে জমিতে নিয়ে গিয়ে মহলাকে গণধর্ষণ করে। এক জন ঘটনার ভিডিয়ো তুলে রাখে মোবাইলে। মোবাইল ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে পরে মোটা টাকাও দাবি করে দুষ্কৃতীরা। কয়েক মাস আগেই রাজস্থানে ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসকে সমর্থন করেছিল মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি। সেই সূত্রেই মোদী মায়াবতীকে নিশানা করে বলেন, অলওয়ার গণধর্ষণ নিয়ে মায়াবতী সত্যিই উদ্বিগ্ন হলে রাজস্থানে কংগ্রেস সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নিতেন।
তার জবাবে সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে মায়বতী পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, ‘‘অলওয়ার গণধর্ষণ নিয়ে মোদী নীরব ছিলেন। এখন সেটা নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছেন, যাতে তাঁর দল বিজেপি ভোটে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে পারে। এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। যিনি নিজেই রাজনৈতিক ফায়দার জন্য নিজের স্ত্রীকে পরিত্যাগ করেছেন, তিনি কী ভাবে অন্য কারও মা-বোনের সম্মান করতে পারবেন।’’একই সঙ্গে এ দিন দলিত ইস্যুতেও মোদীকে বিঁধেছেন বিএসপি সুপ্রিমো।
আরও পডু়ন: সোনার বাংলাকে কাঙাল করে দিয়েছেন দিদি, ক্যানিংয়ে তোপ অমিতের
আরও পডু়ন: এত হিংসা কেন? ‘শান্তিপূর্ণ’ ভোটে কাঠগড়ায় কেন্দ্রীয় বাহিনী
মায়াবতীর আক্রমণের জবাব দিয়েছেন ওড়িশার পুরীর বিজেপি প্রার্থী সম্বিত পাত্র। মায়াবতীর মন্তব্যের পাল্টা টুইটারে তাঁর বক্তব্য, ‘‘...মায়াবতীজি যে ধরনের শব্দ ব্যবহার করেছেন, তা প্রধানমন্ত্রী মোদীর জন্য বেদনাদায়ক। এটা কী ধরনের মানসিকতা? মোদীজির প্রতি এত ঘৃণা? কেন? কারণ উনি প্রকৃত পরিবার ছেড়ে দেশকেই নিজের পরিবার করে তুলেছেন। মায়াবতীজি, আপনার জন্য আপনার ভাই বড় হতে পারে, কিন্তু মোদীর কাছে দেশ সবার আগে।’’
পশ্চিমবঙ্গেও রাজনৈতিক জনসভায় প্রায় প্রতিদিনই মোদীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক সভায় ব্যক্তিগত আক্রমণ করে চলেছেন। যিনি নিজের স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়েছেন এবং খোঁজ খবরই রাখেন না, তিনি দেশ চালাবেন কী ভাবে— এই প্রশ্ন তুলেছেন। পাল্টা মোদী-অমিত শাহরাও স্পিডব্রেকার দিদি, তৃণমূলের তোলাবাজির অভিযোগ করে তা নিয়ে সরব হয়েছেন। খোঁচা দিয়ে চলেছেন মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জুড়ে। কিন্তু সোমবার মায়াবতী ব্যক্তিগত আক্রমণে সে সবই ছাপিয়ে গেলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।