সোমবার দিল্লি বিমানবন্দরে পিপিই পরিহিত এক যাত্রী। ছবি: রয়টার্স
দেশ জুড়ে দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল বিমান পরিষেবা। সোমবার থেকে চালু হয়েছে অন্তর্দেশীয় বিমান যোগাযোগ। কিন্তু সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল বেশ কয়েকটি রাজ্য। সেই তালিকায় ছিল মহারাষ্ট্রও। সেই উদ্বেগই সত্যি প্রমাণিত হল এ দিন। বিমান পরিষেবা চালু হওয়ার কিছু ক্ষণ আগেই জানা গেল মুম্বই বিমানবন্দরে দুই কাস্টমস অফিসারের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
কেন্দ্রের যাত্রিবাহী বিমান চালুর সিদ্ধান্তকে রবিবার ‘অতি কুপরামর্শ’ বলে আখ্যা দিয়েছিল মহারাষ্ট্র সরকার। কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তে উদ্ধব ঠাকরে সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, মুম্বই বিমানবন্দর থেকে ২৫টি করে বিমান উঠতে ও নামতে দেওয়া হবে। পরিস্থিতি বিচার করে বিমানের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলেও জানানো হয়। সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনই মুম্বই বিমানবন্দরের দু’জন কাস্টমস অফিসারের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। এ দিনই মহারাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে শুধু মাত্র মুম্বইতেই সংক্রমিত হয়েছেন ২০ হাজার। এ দিন অবশ্য মুম্বই থেকে বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার কয়েকটি বিমান বাতিল করা হয়েছে।
দিল্লি ও মুম্বইয়ের মতো এ দিন চেন্নাই বিমানবন্দর থেকেও বিমান চালু হওয়ার কথা ছিল। তবে সেখানেও কয়েকটি বিমান বাতিল হয়েছে। এক দিন পর, অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে দেশীয় বিমান পরিষেবা ফের চালু হতে চলেছে অন্ধ্রপ্রদেশে। এ দিন বিমান পরিষেবা চালু হয়েছে উত্তরপ্রদেশেও। তবে যাত্রীদের ১৪ দিন হোম কোয়রান্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক করেছে যোগী সরকার। তেলঙ্গানায় আপাতত দৈনিক তিনটি বিমান ওঠানামা করার কথা। এ ছাড়া এ দিন থেকেই বিমান পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা জম্মু-কাশ্মীর, পঞ্জাব, বিহার, হিমাচলপ্রদেশ, অসম, মেঘালয়, কেরল ও মণিপুরেরও।
আরও পড়ুন: সংক্রমণে ইরানকে টপকে বিশ্বে প্রথম দশে ভারত, মহারাষ্ট্রে আক্রান্ত ছাড়াল ৫০ হাজার
বিমানের ভাড়া সাতটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ন্যূনতম দু’হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ভাড়া ১৮ হাজার ৬০০ টাকা। ভাড়া মূলত নির্ভর করছে যাত্রার সময়ের উপর। সামাজিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখে বিমানের মাঝের আসন খালি রাখা হচ্ছে।
কলকাতায় উড়ান শুরু বৃহস্পতিবার
রবিবারই বিমানযাত্রীদের জন্য একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করা হয় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। তাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে। যাত্রীদের মোবাইলে ‘আরোগ্য সেতু’ অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে প্রতিটি ক্ষেত্রে থার্মাল স্ক্রিনিং করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। জুনের মাঝামাঝি বা জুলাই থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান চালু হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী। সে বিষয়টিকে সামনে রেখে রবিবার আন্তর্জাতিক উড়ানের জন্যও বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়।
এ দিন দেশের অন্যান্য শহর থেকে উড়ান চালু হওয়ার কথা থাকলেও, কলকাতা অবশ্য এখনই সেই তালিকায় নেই। তিন দিন পর, আগামী ২৮ মে, বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে বিমান পরিষেবা চালু হবে। ওই দিন বাগডোগরা থেকেও বিমান ওঠানামা করবে।