—ফাইল চিত্র
রোজকার ব্যবহারের জিনিসপত্র থেকে বৈদ্যুতিন পণ্য, গাড়ি থেকে গাড়ি ভাড়া— এক সঙ্গে একাধিক ক্ষেত্রে দাম বাড়ার সম্ভাবনা দিয়েই শুরু হচ্ছে নতুন বছর।
তৈরি পোশাকের দাম বৃদ্ধি আটকাতে শুক্রবারই জিএসটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছে। কিন্তু জিএসটি বৃদ্ধির জন্য জুতো-চপ্পলের দাম থেকে ওলা-উবরের মতো গাড়ি ভাড়া নেওয়ার পরিষেবার খরচ— বছরের শুরু থেকেই বাড়ছে অনেক কিছু।
অন্য দিকে শিল্পমহলের খবর, কাঁচামালের খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবং মুনাফার মাত্রা কমে যাওয়ায় বছরের গোড়াতেই জিনিসপত্রের দাম বাড়ানো হবে। তার মধ্যে রোজকার ব্যবহারের জিনিসপত্র রয়েছে। রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন, বাতানুকূল যন্ত্রও রয়েছে।
মূল্যবৃদ্ধি সংক্রান্ত পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, বাজারে জিনিসপত্রের দাম, বিশেষত খাদ্যপণ্যের দাম কিছুটা কমলেও শিল্পে যে সব পণ্য কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তার দাম কমছে না। মূলত এই কারণেই বিদায়ী বছরে শিল্পমহল দুই থেকে তিন দফায় রোজকার ব্যবহারের জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছিল। তার কারণ ছিল কাঁচামালের খরচ বৃদ্ধি, পরিবহণের খরচ ও সরবরাহ ব্যবস্থায় সমস্যা। এর পরেও দাম বাড়লে বিক্রিবাটা কিছুটা কমতে পারে জেনেও শিল্পমহল দাম বাড়ানোর কথাই ভাবছে। কারণ বৈদ্যুতিন পণ্য তৈরির ক্ষেত্রে ইস্পাত, তামা, অ্যালুমিনিয়াম, প্লাস্টিকের মতো পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় কাঁচামালের খরচ ২০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
একই কারণে গাড়ির দাম বাড়ানোর পরে ফের গাড়ি নির্মাতা সংস্থাগুলিকে আবার দাম বাড়ানোর কথা ভাবতে হচ্ছে।
আজ জিনিসপত্রের দামবৃদ্ধির জন্য মোদী সরকারের নীতিকেই দায়ী করে কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে, মোদী থাকলে মূল্যবৃদ্ধিও থাকবে। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার অভিযোগ, পাইকারি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার নভেম্বরের ১৪.২৩ শতাংশে পৌঁছেছিল। গত দশ বছরে সর্বোচ্চ। নতুন বছরেও রোজকার ব্যবহারের পণ্য থেকে ইস্পাত, সিমেন্ট, বৈদ্যুতিন পণ্যের জন্য বেশি খরচ করতে হবে। এমনকি এটিএম থেকে নিজের টাকা তুলতে গেলেও ১ জানুয়ারি থেকে বেশি ফি দিতে হবে। সুরজেওয়ালার অভিযোগ, বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলির চাপে মোদী সরকার আপাতত তৈরি পোশাকে জিএসটি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছে। কিন্তু প্রত্যাহার করেনি। পোশাকের ডাই করা, প্রিন্ট করার কাজে ১২ থেকে ১৮ শতাংশ জিএসটি বসানো হয়েছে। জুতো-চপ্পলেও জিএসটি বাড়ছে।
পোশাকে জিএসটি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা নিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দাবি করেছিলেন, সব রাজ্যই এতে রাজি হয়েছিল। গুজরাতের অর্থমন্ত্রী চিঠি লিখে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পরে তড়িঘড়ি বৈঠক ডেকে জিএসটি বৃদ্ধি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। সুরজেওয়ালা বলেন, অর্থমন্ত্রী বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। জিএসটি পরিষদে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলির সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। সেখানে কংগ্রেস-সহ বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি আপত্তি তুলেছিল। তখন কেন্দ্র তাতে কান দেয়নি। এখন উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন দেখে সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়েছে।