ইলাংবাম ভ্যালেন্টিনা
আকুল হয়ে কাঁদছে একটি বাচ্চা মেয়ে। ডান গাল বেয়ে গড়িয়ে নামছে জল। বাঁ হাত দিয়ে সে মুছছে অন্য চোখ। ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রীর চোখ আটকে যায় সেই ভিডিয়োতে। খবর আসে, রাস্তা চওড়া করার জন্য কাটা পড়েছিল দু’টো গুলমোহর গাছ। প্রথম শ্রেণিতে পড়ার সময় গাছ দু’টি লাগিয়েছিল মণিপুরের ইলাংবাম ভ্যালেন্টিনা। এখন সে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। স্কুল থেকে ফিরে প্রিয় গাছ না দেখেই শুরু হয় তার কান্না। কেউ সেই কান্নার ভিডিয়ো ফেসবুকে দিতেই তা ছড়িয়ে পড়ে। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ ছোট্ট ভ্যালেন্টিনাকেই ‘সিএম’স গ্রিন মণিপুর মিশন’-এর ‘মুখ’ ঘোষণা করলেন।
মণিপুরের কাকচিং জেলার হিয়াংলাম মাখা গ্রামের বাসিন্দা ই প্রেমকুমার সিংহের কন্যা ভ্যালেন্টিনা। রোজ স্কুল থেকে ফিরে গাছেদের আদর করে বাড়িতে ঢুকতো সে। সম্প্রতি রাস্তা চওড়ার কাজের জন্য গাছপালা সাফ করা হয়। স্কুল থেকে ফিরে গাছ নেই দেখে হাউহাউ করে কান্না শুরু হয় ভ্যালেন্টিনার। মুখ্যমন্ত্রী বীরেন ও পরিবেশমন্ত্রী টি শ্যামকুমার সবুজ মণিপুর গড়ার অভিযানে নেমেছেন। বীরেন জানান, ‘‘আমি এখন দিল্লিতে। ভ্যালেন্টিনার ভিডিয়ো দেখে অবিলম্বে ওই গ্রামে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য এসপিকে নির্দেশ দিই।’’ এসপি ইয়েংখম ভিক্টোরিয়া ভ্যালেন্টিনার বাড়ি গিয়ে তাঁকে অনেক কষ্টে শান্ত করেন। জানান, শুধু ওই এলাকা নয়, গোটা রাজ্য গুলমোহরে ভরিয়ে দেওয়া হবে। মেয়ের তাৎক্ষণিক আবদার মেটাতে বন দফতর তার গ্রামের দু’কিলোমিটার রাস্তার দু’ধারে ২০টি গাছ লাগায়। স্থানীয় ক্লাবও হাজারটি চারা লাগাচ্ছে।
গত কাল রাজ্যপালের দফতর থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, গাছের প্রতি তাঁর ভালবাসার জন্য ভ্যালেন্টিনাকে ‘সিএম’স গ্রিন মণিপুর মিশন’-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে।