দেশ জোড়া বিক্ষোভের মধ্যে, নয়াদিল্লির শালিমার বাগের ম্যাক্স সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করল রাজ্য। ওই হাসপাতাল আপাতত নতুন রোগী ভর্তি করতে পারবে না। ৩০ নভেম্বর ভুল করে, জীবিত সদ্যোজাতকে মৃত ঘোষণা করেছিল অভিজাত ওই হাসপাতাল। দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন জানিয়েছেন, ‘‘এই অবহেলা মেনে নেওয়া যায় না।’’
৩০ নভেম্বর, ওই হাসপাতালে ২২ সপ্তাহের যমজ শিশু জন্মায়। মেয়েটি মৃতই জন্মেছিল। ছেলেটিকেও তার মৃত যমজ বোনের সঙ্গে একই প্লাস্টিকে মুড়ে বাবা-মার হাতে তুলে দেয় হাসপাতাল। বলে, সেও মারা গেছে। কবর দেওয়ার সময়, নড়ে ওঠে প্লাস্টিক। তাড়াতাড়ি প্লাস্টিক খুলে মা-বাবা দেখেন, ছেলেটি শ্বাস নিচ্ছে, নড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে অন্য হাসপাতালে ছুটে গেলে ছেলেটিকে জীবনদায়ী ব্যবস্থায় রাখা হয়। কিন্তু, বুধবার মারা যায় দ্বিতীয় শিশুটিও।
তত দিনে ঘটনায় উত্তাল দেশ। এই ভুলের তদন্তে তিন সদস্যের প্যানেল নিয়োগ করে দিল্লি সরকার। সেই প্যানেলের রিপোর্টে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে ম্যাক্স হাসপাতাল। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সদ্যোজাতদের জন্য যে নিয়ম আছে তা মানেনি হাসপাতাল। বাচ্চার হৃদ্স্পন্দন মাপতে ইসিজি পরীক্ষাটি করেইনি হাসপাতাল।
তুমুল বিক্ষোভের মাঝেই যমজ-কাণ্ডের দায়িত্বে থাকা দুই ডাক্তার এ পি মেহরা ও বিশাল গুপ্তকে বরখাস্ত করেছিল ম্যাক্স। এ বার তাদের নিজেদেরই লাইসেন্স রদ হয়ে গেল।
যদিও শুক্রবারই এক বিবৃতিতে যমজ শিশুর মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করে ম্যাক্স হেল্থকেয়ারের দাবি, এই ধরনের চরম অকালপ্রসূতদের ক্ষেত্রে বাঁচার সম্ভাবনা বিরল।
তবে, যমজদের পরিবারের দাবি সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাঁরা বলেন, ছেলেটিকে প্রথমে তিন মাস ইনকিউবেটর-এ রাখার প্রস্তাব দেয় হাসপাতাল। তারা বলে, এই ব্যবস্থায় প্রথম তিন দিনের খরচ হবে দিন প্রতি এক লাখ টাকা। তার পর, দিন প্রতি পঞ্চাশ হাজার টাকা লাগবে। এমন খরচের বহর শুনে পরিবারটি দ্বিধা করছিলেন। তখনই হাসপাতাল জানায়, দ্বিতীয় শিশুটিও মারা গেছে। তার পর, প্লাস্টিকে মুড়ে বাবা-মার হাতে এক সঙ্গে ধরিয়ে দেয় জীবিত ও মৃত দুটি শিশুই।