অলোক বর্মা।
মঙ্গলবার রাত এগারোটা। দিনভর আদালতে দুই শীর্ষ কর্তার টানাপড়েন দেখে ঝিমিয়ে পড়েছে সিবিআই সদর দফতর। দিল্লির পাহারার দায়িত্বে থাকা সান্ত্রীরাও গা-এলিয়ে দিয়েছেন।
সওয়া এগারোটা। অন্ধকার চিরে হঠাৎই এগিয়ে আসতে থাকে দিল্লি পুলিশের একটি গাড়ি। সেই গাড়ির মাথায় লাল-নীল ফ্ল্যাশের আলো, সাইরেনের তীক্ষ্ণ শব্দ চিরে দিচ্ছে রাতের নিস্তব্ধতাকে। প্রথমে একটি, তার পর পুরো কনভয়। ঘিরে ফেলা হয় সিবিআইয়ের দফতর।
রাত সাড়ে এগারোটা। সদর দফতরে পৌঁছন সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা এ কে শর্মা। আসেন আর এক যুগ্ম অধিকর্তা এম নাগেশ্বর রাও। তিনি উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তত ক্ষণে চাউর হয়ে গিয়েছে, এক ও দুই নম্বরের লড়াই দেখে দু’জনকেই ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অন্তর্বর্তিকালীন প্রধান হচ্ছেন নাগেশ্বর। জানা যায়, রাতেই বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিভিসি। দিল্লিতে গুঞ্জন, সিভিসির বৈঠক ও নাগেশ্বরকে বেছে নেওয়া— সবটার দায়িত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অতিরিক্ত প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্র। সিভিসির সুপারিশের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ক্যাবিনেট সচিব ও তাঁর সচিবালয়ের অতিরিক্ত প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্রের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। পাকা হয় সিদ্ধান্ত।
নাটক অবশ্য এখানেই শেষ নয়। কারণ, রাতের মধ্যেই সিদ্ধান্তের কথা জানাতে হবে সিবিআই প্রধান অলোক বর্মাকে। তা না হলে দায়িত্ব নিতে পারবেন না রাও। তাই কর্মিবর্গ দফতরের এক পদস্থ আমলা ফোন করেন বর্মাকে। তার পরে গভীর রাতে ক্যাবিনেট সচিবের প্রতিনিধি কড়া নাড়ে জনপথ রোডে বর্মার বাড়িতে। তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় ছুটিতে যাওয়ার নির্দেশ সম্বলিত চিঠি।
এই পর্ব শেষ হতেই দায়িত্ব নেন নাগেশ্বর। তখন রাত প্রায় বারোটা। সিবিআই সূত্র বলছে, দায়িত্ব নেওয়ার পরেই প্রাক্তন অধিকর্তা অলোক বর্মা ও রাকেশ আস্থানার ঘরে যান রাও। তাঁর উপস্থিতিতে সিল করে দেওয়া হয় ওই দু’জনের ঘর।