প্রতীকী ছবি।
সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতাদের ফোনে আড়ি পাতার তদন্ত হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত পিছিয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে। কোর্ট জানাল কেন্দ্র আদালতে এলেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শুধু তা-ই নয়, এ নিয়ে অভিযোগের বয়ানও কেন্দ্রের কাছেও পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
দেশের সাংবাদিক এবং বিশিষ্টদের ফোনে আড়ি পাতার ঘটনায় আদালতের নজরদারিতে তদন্তের আবেদন জানিয়েছিল এডিটর্স গিল্ড। এ ছাড়াও পেগাসাস নিয়ে বেশ কিছু লিখিত হলফনামা দাখিল করা হয় সুপ্রিম কোর্টে। বৃহস্পতিবার সেই সমস্ত আবেদনের শুনানির দিন আগামী মঙ্গলবার, ১০ অগস্ট পর্যন্ত পিছিয়ে দিয়েছে আদালত। তবে শর্ত দিয়েছে, তার আগে পেগাসাস-কাণ্ড নিয়ে অভিযোগের নথি কেন্দ্রের কাছে পাঠাতে হবে। কেন্দ্র আদালতে এলেই এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি এনভি রমন এবং বিচারপতি সূর্য কান্তের ডিভিশন বেঞ্চে এডিটর্স গিল্ডের তরফে ছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি বলেন, ‘‘পেগাসাস এমন একটি প্রযুক্তি, যা অজান্তে আমাদের ব্যাক্তিগত জীবনে অনধিকার প্রবেশ করে।’’ তিনি প্রশ্ন করেন, দেশের বিশিষ্টজন এবং সাংবাদিকদের ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে— এই তথ্য জানা সত্ত্বেও কেন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি কেন্দ্র?
পেগাসাস নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সংসদে সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ইজরায়েলের তৈরি একটি সফটওয়্যার ভারতের ১২২ জনের ফোনে আড়ি পেতেছে। সিব্বল জানতে চান, যদি কেন্দ্র জেনেই থাকে যে এমন হয়েছে, তবে কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি কেন? তারা এতদিন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে কেন?
সিব্বল যুক্তি দেন, এটা দেশের নাগরিকদের গোপনীয়তা রক্ষার বিষয় ছিল। এবং তথ্য বলছে, সরকার ছাড়া এই প্রযুক্তি কেনার ক্ষমতা আর কারও ছিল না। শুধু তাই এক একজনের ফোনে আড়ি পাততে ৫০ হাজার ডলার খরচ হয় বলেও জানান তিনি। আদালতে এ বিষয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়ে কপিল বলেছিলেন, ফোনে আড়ি পাতার নির্দেশ কেন দেওয়া হল, তার জন্য কত অর্থ ব্যয় হয়েছে, তা জানতে তদন্ত হওয়া দরকার।
সিব্বল ছাড়াও ন’টি লিখিত হলফনামা জমা পড়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সিব্বল এবং সেই সব আবেদনকারীর আইনজীবীদের আদালত প্রশ্ন করেছিল, তাঁদের অভিযোগের নথি কেন্দ্রের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে কি না। এরপরই তা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। তারা জানায়, তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার মতো প্রমাণ নেই। কেন্দ্র আগে আদালতে আসুক। তারপর এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।