ত্রিপুরায় যৌথ ভাবে সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। নিজস্ব চিত্র।
একেবারে শেষ লগ্নে এসে ত্রিপুরায় আসন সমঝোতা পাকা করে ফেলল বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। রাজ্যের মোট ৬০টি আসনের মধ্যে বামফ্রন্ট লড়ছে ৪৬ এবং কংগ্রেস ১৩টিতে। একটি আসনে নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করছে তারা। এরই পাশাপাশি তিপ্রা মথা-র সঙ্গেও পরোক্ষ কিছু বোঝাপড়া হচ্ছে তাদের। যদিও খাতায়-কলমে ৪২টি আসনে প্রার্থী থাকছে মথা-র। বিরোধী এই সব পক্ষেরই বক্তব্য, ত্রিপুরাকে বিজেপির ‘অপশাসন’ থেকে মুক্ত করাই তাদের মূল লক্ষ্য।
মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। কংগ্রেসের জন্য বামেরা ১৩টি আসন ছাড়লেও কংগ্রেস ১৭টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। তার মধ্যে একটি আসনে কংগ্রেস প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। বাকি তিনটি বাড়তি আসন থেকে তারা এ দিন মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছে। একই ভাবে সিপিএমও কংগ্রেসের ১৩টি আসনে প্রার্থী দিয়ে রেখেছিল চাপ বাড়ানোর জন্য। সেই ১৩টি কেন্দ্র থেকে তারা মনোনয়ন তুলে নিয়েছে। আসনের জট ছাড়াতে বাম ও কংগ্রেস নেতাদের দফায় দফায় আলোচনা চালাতে হয়েছে। হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে দু’পক্ষের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও।
জট কেটে যাওয়ার পরে রাজ্য বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নারায়ণ কর কংগ্রেসের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, ‘‘বিজেপির অপশাসন থেকে মুক্তি দিতে তারা আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়েছে। নির্বাচনে প্রয়োজন বোধে আমরা একসঙ্গেই মানুষের কাছে যাব। যাতে করে বিজেপিকে পরাস্ত করার বার্তা দেওয়া যায়।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিংহের দাবি, ‘‘গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে এবং সাম্প্রদায়িক শক্তিকে বিনাশ করতে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের মধ্যে আসন সমঝোতা করে যে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছিল, উভয় পক্ষই তা মর্যাদার সঙ্গে পালন করছে। আমাদের আসন সমঝোতা খুবই শক্তিশালী হবে। যৌথ ভাবে প্রচার করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
সিপিএমের ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীর মতে, ত্রিপুরার বুকে বিজেপি সরকার ‘দুঃশাসন’ চালাচ্ছে। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ীই কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের আসন সমঝোতা সম্পূর্ণ হয়েছে। রাজ্যের ‘মানুষের চাহিদাকে সম্মান’ জানিয়ে একসঙ্গে নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়তে আবেদন করেছেন জিতেন্দ্র। সূত্রের খবর, মথা তাদের কোনও আসন থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার না করলেও বেশ কিছু কেন্দ্রেই প্রয়োজনমাফিক তারা বাম-কংগ্রেসকে সহায়তা করবে। আবার ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য কাগজে-কলমে সব দরজাই তারা খোলা রাখছে। আর ‘ভোট-সর্বস্ব রাজনীতি’ থেকে দূরে থাকার কথা বলেও এসইউসি আগরতলা, টাউন বড়দোয়ালি-সহ পাঁচটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।