কিরেন রিজিজু। — ফাইল চিত্র।
এত মামলা যখন ঝুলে রয়েছে, তখন জামিনের আর্জি সুপ্রিম কোর্টের শোনা উচিত নয় বলে গত কালই মন্তব্য করেছিলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। আজ আইনমন্ত্রী ফের কলেজিয়াম ব্যবস্থাকে নিশানা করে বললেন, বিচারপতি নিয়োগের নতুন ব্যবস্থা তৈরি না হলে উচ্চ আদালতে শূন্য পদের সমস্যা মিটবে না। পুরনো মামলার পাহাড়ও কমানো যাবে না।
দেশের নতুন প্রধান বিচারপতি হিসেবে ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড় নিযুক্ত হওয়ার সময় থেকেই মোদী সরকারের আইনমন্ত্রী রিজিজু বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম ব্যবস্থার সমালোচনা শুরু করেছেন। শুধু আইনমন্ত্রী নন, সংসদের চলতি অধিবেশনের প্রথম দিনে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ও বিচার বিভাগকে বিঁধেছিলেন। সংসদে পাশ হওয়ার পরেও জাতীয় বিচারপতি নিয়োগ কমিশন আইন খারিজ করে দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনা করেছেন তিনি। এ বার আইনমন্ত্রী পরপর দু’দিন সংসদে দাঁড়িয়ে সুপ্রিম কোর্টের কী করা উচিত, তা নিয়ে মন্তব্য করলেন। আজ রিজিজু রাজ্যসভায় বলেন, ‘‘আদালতে বকেয়া মামলার সমস্যা মিটছে না। শূন্য পদ রয়েছে। কিন্তু বিচারপতি নিয়োগে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা সীমিত। সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।’’ এখানেই থামেননি রিজিজু। একই সঙ্গে বলেছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে বছরে ১৪১ দিন, হাই কোর্টগুলিতে বছরে ১৫৫ দিন ছুটি থাকে। অনেক দিন ছুটি থাকায় মানুষের বিচার পেতে সমস্যা হচ্ছে।’’
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও আইনজীবী সলমন খুরশিদ বলেন, ‘‘বিচারপতি নিয়োগের কথা ভুলে যান। কেন্দ্রীয় সরকার তো বিচার বিভাগের খুঁটিনাটি বিষয়েও নাক গলাতে চাইছে। তাদের ছুটি কমাতে চাইছে। জামিনের আবেদন শুনতে বারণ করছে। এর পরে কী আসতে চলেছে?”
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরে অনেক সমাজকর্মীই সুপ্রিম কোর্টে এসে জামিন পেয়েছেন। রিজিজু বুধবার বলেছিলেন, বহু মামলা ঝুলে রয়েছে। তাই তিনি ঘরোয়া ভাবে বিচারপতিদের বলবেন, তাঁরাযেন জামিনের আবেদন, তুচ্ছ বিষয়ের জনস্বার্থ মামলা না শোনেন। এই প্রসঙ্গে প্রবীণ আইনজীবী তথা রাজ্যসভার সাংসদ কপিলসিব্বলের প্রশ্ন, ‘‘উনি কি আদৌ স্বাধীনতার অর্থ বোঝেন?” কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘আইনমন্ত্রী আইন পড়ার সময়ে অন্য কিছুতে ব্যস্ত ছিলেন। উনি বোধ হয় বিচারপতি কৃষ্ণ আইয়ারের মাইলফলক রায় পড়েননি। যেখানে বলা ছিল, জেল নয়, জামিনটাই নিয়ম।’’