কেরল হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
একত্রবাস বিবাহ নয়, তাই ডিভোর্স বা বিবাহবিচ্ছেদের প্রশ্নই উঠছে না। একটি মামলায় এই রায় দিয়েছে কেরল হাই কোর্ট।
আদালত জানিয়েছে, কোনও যুগল যদি সম্মতিক্রমে একসঙ্গে বসবাস করেন, তাকে বিবাহ বলা যায় না। কারণ, বিবাহকে পাসোর্নাল ল কিংবা স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের আওতায় নথিভুক্ত হতে হবে। শুধুমাত্র সেই ক্ষেত্রেই বিবাহ বিচ্ছেদের প্রশ্ন উঠতে পারে। কেরল হাই কোর্টের দুই বিচারপতি এ মহম্মদ মুস্তাক ও সফি টমাসের বেঞ্চ জানিয়েছে, একত্রবাসের বিষয়টি ভারতে এখনও আইনি স্বীকৃতি পায়নি। পাসোর্নাল ল এবং স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের মাধ্যমে বিবাহই এদেশে স্বীকৃত বিবাহের পদ্ধতি।
কেরল হাই কোর্ট একটি যুগলের আবেদন নিয়ে বিচার করতে গিয়ে এই রায় দিয়েছে। আবেদনকারীর মধ্যে একজন হিন্দু ও অন্যজন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। ২০০৬ সালে তাঁরা একত্রবাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন চুক্তিপত্রের মাধ্যমে। ওই যুগলের একটি সন্তানও রয়েছে। কিন্তু একত্রবাসে থাকার পর ওই যুগল এখন পরস্পরের সম্মতিতে বিচ্ছেদ চাইছেন। বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য পারিবারিক আদালতে মামলা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু পারিবারিক আদালত তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদে সম্মতি দেয়নি। পারিবারিক আদালতের বক্তব্য ছিল, ওই যুগল যে-হেতু স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের আওতায় বিবাহ করেননি, তাই তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদে সম্মতি দেওয়া সম্ভব নয়। এরপর ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে যুগল কেরল হাই কোর্টে আসেন।
এই মামলায় আবেদনকারী যুগলের আইনজীবী যুক্তি দেন, তাঁর মক্কেলরা তাঁদের সম্পর্ককে বিবাহ হিসেবেই মেনে নিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে তাঁদের ঘোষণাপত্রও রয়েছে— সে ক্ষেত্রে আইনসম্মত ভাবে তাঁদের বিবাহ হয়েছে কিনা, তা আদালতের দেখার বিষয় নয়। তবে হাই কোর্ট বলেছে, শুধুমাত্র চুক্তির মাধ্যমে যখন ওই যুগল একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং পাসোর্নাল ল কিংবা স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের মাধ্যমে সেই সম্পর্ক স্বীকৃত হয়নি, তখন তাঁদের বিবাহ হয়েছে বলে দাবি করা যাবে না। সেক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদও সম্ভব নয়। একই সঙ্গে হাই কোর্ট জানিয়েছে, এই ধরনের বিবাহ বিচ্ছেদের আর্জি নিয়ে বিচার করার এক্তিয়ার পারিবারিক আদালতের নেই।