কিষাণ যাত্রার নামে জোকারের মতো কাজ করছেন রাহুল গাঁধী— এমনই ভাষায় কংগ্রেসের সহ-সভাপতিকে আক্রমণ করলেন লালুপ্রসাদ।
আজ উত্তরপ্রদেশের মথুরায় কৃষ্ণমন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে লালু বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশের মানুষ রাহুলের জোকারের মতো কাজকর্মে একেবারেই ফাঁসবেন না।’’ কংগ্রেসের শীর্ষনেতার রামমন্দির সফর নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আরজেডি-প্রধান।
ভোটের আবহে গত কয়েক দিন ধরে উত্তরপ্রদেশে ‘কিষাণ যাত্রা’ করছেন রাহুল। সম্প্রতি সে রাজ্যেই তাঁর একটি সভাস্থলে নিয়ে আসা খাটিয়া লুট করতে হুড়োহুড়ি পড়েছিল। তা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন রাহুল।
রাহুল গাঁধীর সঙ্গে লালুপ্রসাদের ‘বিরোধ’ অনেক পুরনো। দু’জনে কার্যত একে অন্যকে এড়িয়ে চলেন। বিহারের ভোটে দু’দল জোট বাঁধলেও, রাহুলের প্রচারসভায় কখনও লালুপ্রসাদ বা তাঁর দলের কাউকে দেখা যায়নি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাহুলের চাপেই নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হিসেবে মেনেছিলেন লালু।
এমনই পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশের ভোট-ময়দানে আরজেডি কোনও প্রার্থী দেবে না বলে সমাজবাদী পার্টিকে বার্তা দিয়েছে। কোনও ভাবেই যাতে সে রাজ্যে যাদব ভোট ভাগ না হয় তা নিয়ে সক্রিয় লালুপ্রসাদ। রাহুল এবং কিষাণ যাত্রার ‘ব্ল-প্রিন্ট’ তৈরির কারিগর প্রশান্ত কিশোরকে কেন আক্রমণ করলেন লালু, তা নিয়ে বিহারের রাজনীতিতে জল্পনা ছড়িয়েছে।
কাল লালুর দলের প্রথম সারির নেতা সাহাবুদ্দিন জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই নীতীশকে ‘পাকচক্রে মুখ্যমন্ত্রী’ বলে চিহ্নিত করেছিলেন। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, সাহাবুদ্দিনের মন্তব্যের জেরে নীতীশের সঙ্গে লালুর কিছুটা হলেও দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সাহাবুদ্দিনের মন্তব্য নিয়ে নীতীশ কুমার আজ বলেন, ‘‘জনগণের ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেছি। এ সমস্ত কথায় কান দিতে চাই না। সাংবাদিকদেরও বলব তাঁরা যেন সময় ও জায়গা, দু’টোই নষ্ট না করেন।’’ এ দিন অবশ্য সাহাবুদ্দিন দিনভর নিজের গ্রাম প্রতাপপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গেই কাটিয়েছেন। জেলা থেকে শুরু করে জাতীয় স্তরের সমস্ত সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
জেডিইউ নেতারাও সাহাবুদ্দিনের সমালোচনায় সরব হয়েছেন। তাঁকে ‘গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকারক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন জেডিইউ মুখপাত্র নীরজ কুমার। বিজেপি নেতা সুশীল মোদীর দাবি, সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে ‘ক্রাইম কন্ট্রোল’ আইনে মামলা দায়ের করা হোক। নীতীশ কুমারের প্রতি তাঁর আবেদন— সুশাসন এবং সাহাবুদ্দিন একসঙ্গে থাকতে পারে না। সাহাবুদ্দিনের জামিনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। পাশাপাশি, সিওয়ানে খুন হওয়া সাংবাদিক রাজদেব রঞ্জনের স্ত্রী নিরাপত্তা ও তদন্তের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করতে দিল্লিতে গিয়েছেন।