অজয়ের অপসারণের দাবিতে সংসদ ভবন চত্বরে বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত।
বিরোধীদের দাবি সত্ত্বেও লখিমপুর-খেরি কৃষক হত্যার ঘটনায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিল না বিজেপি। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে অজয়কে নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলে সরকারি সূত্রের খবর।
উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর-খেরিতে চার কৃষককে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আকাশ মিশ্রের বাবা অজয় মিশ্র টেনিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করার দাবিতে বুধবার লোকসভায় মুলতুবি প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী। সংসদের দুই কক্ষে একই দাবিতে সরব হয়েছিল বিরোধীরা।
রাহুল বৃহস্পতিবার সংসদে ফের লখিমপুর-কাণ্ড নিয়ে সরব হন। তিনি বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এরক রিপোর্ট বলথে লখিমপুর-খেরিতে কৃষকদের খুনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। সকলেই জানেন কার ছেলে তাতে জড়িত। আমরা বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনা চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে গেলেন।’’ রাহুলের দাবি, অজয় এক জন ‘অপরাধী’।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনি।
রাহুল বুধবার লোকসভা লখিমপুর-কাণ্ড নিয়ে লোকসভায় আলোচনার দাবিতে মুলতুবি প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ড়ুর কাছে একই দাবিতে মুলতুবি প্রস্তাব জমা দিয়েছে তৃণমূল। সংসদ ভবন চত্বরে গাঁধী মূর্তির সামনে অজয়ের অপসারণের দাবিতে দলের সাংসদেরা বৃহস্পতিবার বিক্ষোভও দেখান।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় বুধবার উত্তরপ্রদেশে জেলবন্দি ছেলের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। এর পর একটি কর্মসূচিতে তাঁকে কৃষক হত্যার ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে যান বলেও অভিযোগ। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের আগে প্রভাবশালী ব্রাহ্মণ নেতা অজয়ের বিরুদ্ধে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ব্যবস্থা নিতে চাইছেন না বলে দলীয় সূত্রের খবর।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) মঙ্গলবার আদালতে পেশ করা রিপোর্টে জানিয়েছে, লখিমপুর-খেরিতে খুনের ষড়যন্ত্র করেই কৃষকদের গাড়ির চাকায় পিষে দেওয়া হয়েছিল। এটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, অবহেলা নয়। সিট রিপোর্টের ভিত্তিতে আশিসের বিরুদ্ধে খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়েরের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গত ৩ অক্টোবর লখিমপুর খেরিতে আশিসের গাড়ির তলায় চাপা পড়ে বিক্ষোভকারী চার কৃষকের মৃত্যু হয়েছিল। পরবর্তী হিংসায় আরও চার জনের প্রাণ যায়। যদিও অজয়ের দাবি, ঘটনার সময় ওই গাড়িতে ছিলেন না আশিস।
প্রসঙ্গত, অতীতে অপরাধমূলক কাজে অজয়ের নামও জড়িয়েছে। ১৮ বছর আগে প্রভাত গুপ্ত নামে এক ব্যক্তির খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় অজয়ের। সেই মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে ভরা আদালতের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হন অজয়। পরে নিম্ন আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হন। অভিযোগ থেকে মুক্তিও পান। ইলাহাবাদ হাই কোর্টে সেই মামলা এখনও বিচারাধীন।