জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত।
সংখ্যালঘু পরিচয়ের কারণে তাঁকে বৈষম্য, হেনস্থা এবং দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হচ্ছে বলে দিল্লির সংখ্যালঘু কমিশনে অভিযোগ জানালেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা রোসিনা নাসির। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে এ নিয়ে নোটিস পাঠিয়েছে কমিশন। অন্তর্বর্তী নির্দেশও জারি করেছে।
রোসিনার অভিযোগ সরাসরি উপাচার্য মামিডালা জগদেশ কুমার এবং তাঁর নিজের বিভাগীয় প্রধান যগতি চিন্না রাওয়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাচক্রে রোসিনা সামাজিক বহিষ্করণ এবং অন্তর্ভুক্তি নিয়েই গবেষণা করেন। ‘সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব সোশ্যাল এক্সক্লুশন অ্যান্ড ইনক্লুসিভ পলিসি’ বিভাগেরই অধ্যাপক তিনি। চিন্নারাও এই বিভাগেরই চেয়ারপার্সন।
পরিস্থিতির চাপে তিনি আত্মহননের কথাও ভেবেছেন বলে জানিয়ে রোসিনা কমিশনকে লিখেছেন, নানা ভাবে তাঁকে চাকরি ছাড়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগের চিঠিতে তিনি লিখছেন, অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করা না হলে হয়তো তাঁকে আর খুঁজেই পাওয়া যাবে না। ‘‘জেএনইউয়ের ছাত্র নজীবের মতো আমাকেও হয়তো নিরুদ্দেশ করে দেওয়া হবে।’’
২০১৩ সালে জেএনইউয়ে আসার আগে রোসিনা হায়দরাবাদের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন। জেএনইউয়ে-ও ২০১৭-র আগে কোনও সমস্যা ছিল না বলে দাবি করেছেন রোসিনা। মেয়াদভিত্তিক পদটির জন্য ২০১৭ থেকে তাঁকে বেতন দেওয়া হচ্ছিল না বলে অভিযোগ।
যদিও ইউজিসি তাঁর সেন্টারের মেয়াদ বাড়িয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, এ সব ক্ষেত্রে ইউজিসি বেতন না দিলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তা দেওয়ার কথা।
রোসিনা গত বছর হাইকোর্টে এ নিয়ে মামলা করে জিতেছেন। এ বছর মে মাসে তাঁকে বকেয়া বেতন দেওয়া হয়েছে, কিন্তু ফের বন্ধ হয়ে গিয়েছে চলতি বেতন। হস্টেল ওয়ার্ডেনের দায়িত্ব কেড়ে নিয়ে তাঁকে ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে বলা হচ্ছে। রোসিনার অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ তাঁকে সরাসরি বলেছেন, মুসলিম হয়ে তিনি কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন না।
রোসিনার প্রাক্তন সহকর্মী কৌস্তুভ বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ করছেন, শুধু রোসিনার প্রতি বৈষম্যই নয়। বর্তমান জমানায় সামাজিক বহিষ্করণ এবং অন্তর্ভুক্তির মতো বিষয় নিয়ে গবেষণাকেন্দ্রগুলির উপরেই আঘাত আসছে। রোসিনার মতো তাঁরও বেতন আটকানো হয়েছিল। হাইকোর্টে তিনিও রোসিনার সঙ্গেই মামলা করেছিলেন। বকেয়া বেতন বুঝে নিয়ে তিনি অন্যত্র চাকরি নিয়েছেন।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।