হাওয়ালা কাণ্ডে অভিযোগ যেদিন সামনে এল, সেদিন সন্ধেবেলাই পন্ডারা পার্কে তাঁর পুরনো বাসভবনে পরিবারের সঙ্গে বসে বিজেপি সভাপতি লালকৃষ্ণ আডবাণী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তিনি দলীয় সভাপতি থাকলেও সাংসদ পদটি থেকে ইস্তফা দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী বারণ করেছিলেন। কারণ, সেটি ছিল নেহাতই অভিযোগ, প্রামাণিক সত্য নয়। তবু ইস্তফা ঘোষণা করেই অশোক রোডে সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে এলেন আডবাণী। সকলকে বললেন, ‘‘দলের কান্ডারি হিসেবে নীতির দৃষ্টান্ত রাখতে চাই। অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে ফিরে আসব।’’ পরে বেকসুরই প্রমাণিত হন তিনি।
আডবাণীর ইস্তফা ১৯৯৬ সালের কথা। আজ যখন দলের সভাপতি অমিত শাহের পুত্র জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তখন অমিতেরও কি উচিত নয় সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া? বিরোধীরা তো বটেই, বিজেপিতেও নিতিন গডকড়ীরা এ নিয়ে আলোচনা করছেন। এক নেতার কথায়, ‘‘জয় শাহের নামে অভিযোগ সত্য, এ কথা বলছি না। কিন্তু ইস্তফা দিয়ে বিরোধীদের পালের বাতাসটি কেড়ে নিতে পারতেন অমিত।’’
গডকড়ী নিজে সভাপতি থাকার সময়েও তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো সংস্থা গড়ার অভিযোগ উঠেছিল। তিনি ইস্তফা দিয়েছিলেন। সে অভিযোগ আজও প্রমাণিত হয়নি। বঙ্গারু লক্ষ্মণ সভাপতি থাকার সময় স্টিং অপারেশনে এক লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে ইস্তফা দেন বঙ্গারু।
পরে মোদী জমানায় ললিত মোদীকে ঘিরে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুষমা স্বরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। তাঁরাও পদত্যাগ করেননি। আডবাণী তা নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। এই প্রতিবেদককে শুধু বলেছিলেন, ‘‘আমি কারও কথায় নয়, নিজের বিবেকের তাগিদে ইস্তফা দিয়েছিলাম। এটা ব্যক্তি নৈতিকতা প্রতিষ্ঠার প্রশ্ন।’’