স্বাগত: লালকৃষ্ণ আডবাণীকে ‘খাদা’ পরিয়ে সম্মান জানাচ্ছেন দলাই লামা। মঙ্গলবার দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
দলাই লামার সঙ্গে বৈঠক করলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। আর আজ, সেই একই দিনে অরুণাচলের ছ’টি এলাকার চিনা-নাম দেওয়ার বিরুদ্ধে দিল্লির চিনা দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন রাজধানীতে পড়াশোনা করা ওই রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা। তাদের সঙ্গী হল আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। সেখানে স্লোগান উঠল— ‘চিন সরকার ডাউন, ডাউন!’ ‘ভারতমাতা জিন্দাবাদ!’
এই দু’টি ঘটনা স্পষ্ট করে দিচ্ছে, চিন নিয়ে কট্টর রণকৌশল থেকে পিছু হঠতে নারাজ মোদী সরকার। নির্বাচনের আগে অরুণাচলে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী চিনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন। ক্ষমতায় আসার পর অবশ্য প্রাথমিক ভাবে চিন-নীতির প্রশ্নে নরম-গরম রণকৌশল নিয়েই চলছিল মোদী সরকার। তবে গত কয়েক মাস ধরে চিনের সঙ্গে সংঘাতের রাস্তাতেই হেঁটেছে কেন্দ্র। সম্প্রতি অরুণাচলপ্রদেশে দলাই লামার সফরটিও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। চিন প্রশ্ন তুলেছে, তিব্বতি ধর্মগুরুর সফরটি যদি শুধুমাত্র আধ্যাত্মিক কারণেই হয়, তা হলে সর্ব ক্ষণের সঙ্গী হিসাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু কেন থাকলেন?
ভারত স্বাভাবিক ভাবেই কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি। কেন্দ্রীয় সূত্রের বক্তব্য, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এই মুহূর্তে নেহরুর চিন সম্পর্কিত সমস্ত রোমান্টিসজম ঝেড়ে ফেলে সিংহবিক্রমই দেখাতে চাইছেন। প্রশ্ন উঠছে, এশিয়ার সব চেয়ে বড় শক্তির বিরুদ্ধে এই তাল ঠুকে যাওয়ার পরিণাম শেষ পর্যন্ত কতটা ভাল হবে।
দলাই লামার সঙ্গে আডবাণীর ব্যক্তিগত যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। কিন্তু এই মুহূর্তে যখন তিব্বতি ধর্মগুরুর সঙ্গে ভারতের রাজনৈতিক যোগসাজসের অভিযোগ তুলছে চিন, ঠিক তখনই দলাই-আডবাণী বৈঠকটি উত্যক্ত করবে বেজিংকে। সূত্রের বক্তব্য, চিনকে খোঁচানোর জন্যই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। আডবাণী সরকারের কোনও কর্তা না হলেও, দলাই–এর সঙ্গে রাজনৈতিক ‘ট্র্যাক টু’ যোগাযোগ চালানোর জন্য আদর্শ ব্যক্তি। এর ফলে অভিযোগের তর্জনী তুলতে পারবে না চিন।