ভাসছে কোঝিকোড়। ছবি: পিটিআই।
যত দূর চোখ যায় শুধু জল আর জল। বন্যায় ডুবেছে মহারাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। তার মধ্যে সাঙ্গলি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে এসে হাসিমুখে নিজস্বী তুলে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়লেন মহারাষ্ট্রের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী এবং বিজেপির পাঁচ বারের বিধায়ক গিরিশ মহাজন। কর্নাটকের গডগ জেলায় মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পার কনভয় আটকানোর চেষ্টা করেছেন বন্যাদুর্গতরা। লাঠি চালাতে হয়েছে পুলিশকে। কেরলের মলপ্পুরমে বৃষ্টির চোটে একটি বড়সড় ধস নেমে অন্তত ৪০ জন চাপা পড়েছেন বলে সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিয়ো। তাতে দেখা গিয়েছে, লাইফবোটে সওয়ার মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী গিরিশ ও তাঁর সঙ্গীরা ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ছেন। হাসি মুখে পোজ দিচ্ছেন মন্ত্রী। বৃহস্পতিবার এই সাঙ্গলিতেই লাইফবোট উল্টে ১৪ জন মারা যান। তার পরে গিরিশের এই আচরণ অত্যন্ত অমানবিক বলে শুক্রবার দিনভর সরব হন নেটিজেনরা। এই প্রসঙ্গে বিজেপির আর এক নেতা পঙ্কজা মুন্ডের নাম উঠে এসেছে চর্চায়। ২০১৬ সালে খরা পীড়িত মরাঠাওয়াড়ায় গিয়ে নিজস্বী তুলে সমালোচিত হন এই নেতা-মন্ত্রী।
শুধু সাঙ্গলি নয়, কোলাপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা এ দিন নতুন করে জলমগ্ন হয়েছে। স্থানীয় পাঁচগঙ্গা নদীর জল ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। গোটা কোলাপুর শহরটাই চলে গিয়েছে ১০ ফুট জলের তলায়। বাড়ি ঘরের ছাদটুকু ছাড়া চোখে পড়ে না কিছুই। সড়কপথে ত্রাণ, আনাজ, জ্বালানি নিয়ে আসা ট্রাকগুলি কোলাপুর থেকে অন্তত ৩০-৪০ কিলোমিটার দূরে থেমে যেতে বাধ্য হয়েছে। আবহাওয়া দফতর আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়ায় পরিস্থিতি ফের খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্যার জেরে মহারাষ্ট্রের পাঁচ জেলায় এখনও পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে নৌসেনা। এ পর্যন্ত ২ লক্ষ মানুষকে উদ্ধার করেছে তারা।
বন্যায় বেহাল কেরলও। ওয়েনাড, ইদুক্কি, মলপ্পুরম, কোঝিকোড়ে লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। ১৪টি জেলায় স্কুল-কলেজ বন্ধ। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কোচির। জল ঢুকে পড়ায় রবিবার বিকেল ৩টে পর্যন্ত কোচি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। রাজ্য জুড়ে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২২। পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুক্রবার থেকে উদ্ধার কাজে নেমেছে সেনাবাহিনী।