প্রতীকী ছবি।
৫৩০ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে, নিজেদের বাঁচার সম্বলটুকু বিক্রি করে মৃত মেয়ের উপর অন্যায়ের বিচারের আশায় কাঠুয়ার নির্যাতিতা শিশুর বাবা-মা। সম্পত্তি হিসাবে ছাগল-ভেড়া যা রয়েছে সঙ্গে, একে একে সেগুলোকেই এখন বিক্রি করে বিচারের খরচা জোগাচ্ছেন তাঁরা।
নিরপেক্ষ বিচারের জন্য কাঠুয়া মামলা পঞ্জাবের পঠানকোটে সরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা নিজেই। সেই আবেদন মেনে মামলার শুনানি চলছে এখন পঠানকোটে। আর তাঁরা থাকেন কার্গিলের কাছে একটি গ্রামে। কার্গিল থেকে পঠানকোট অনেকটা রাস্তা। দূরত্বের হিসাবে ৫৩০ কিলোমিটার। যাতায়াতের খরচও অনেক। আর তাই প্রতিবারে মামলার শুনানির আগে যাতায়াতের খরচ জোগাতে ছাগল-ভেড়া বিক্রি করতে হয় তাঁদের।
অবশ্য তাতেও হাল ছাড়তে চান না ওই নাবালিকার বাবা-মা। নির্যাতিতা নাবালিকার বাবা ইয়াকুব বলেন, ‘‘তিন থেকে চারবার আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছে। প্রতিবারই যখন শুনানির দিন থাকে, আমাদের ভেড়া বা ছাগল বেচে যাতায়াতের খরচ জোগাতে হয়। এ ভাবে শেষ পর্যন্ত আমরা ন্যায়ের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।’
আরও পড়ুন: বাথরুমে পড়ে ৪০ মিনিট, দেখলই না কেউ! প্রসূতির মৃত্যুতে কাঠগড়ায় হাসপাতাল
তবে এই ‘শেষ’-টা যে ঠিক কী? তা তাঁরা কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। মা চান ফাঁসিই হোক দোষীর। কিন্তু পর মুহূর্তেই তাঁর দুশ্চিন্তা, ‘‘ওদের ফাঁসি হলে তো আমাদের মেরে ফেলবে।’’ আর এই ভয়ের জন্য যখন পঠানকোটে মামলার শুনানিতে আসেন তাঁরা, কোনও প্রতিবেশীর কাছে নিরাপদ আশ্রয়ে রেখে আসেন অন্যান্য সন্তানদের। সম্প্রতি এমন হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। নির্যাতিতা ওই নাবালিকার মা বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে ওই গ্রামের কয়েকজন আমাদের দেখতে পান আর তারপরই আমাদের হুমকি দিতে শুরু করেন। এই গ্রামে ঢুকলে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন তাঁরা।’’
এপ্রিল মাসে স্টেট লিগাল সার্ভিস অথোরিটি তাঁর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও টাকাই তাঁরা পাননি বলে জানিয়েছেন।