Assam

KLO: শান্তি-কথা চান জীবন, বার্তা অসম ও কেন্দ্রকে

অসম পুলিশের বক্তব্য, আলফার পৃষ্ঠপোষকতায় চলা কেএলও-র পক্ষেও একা লড়াই চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই তাদেরও আলোচনার রাস্তায় আসতেই হবে

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত, অনির্বাণ রায়

গুয়াহাটি ও জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:২২
Share:

কেএলও প্রধান জীবন সিংহ (মাঝে)। ছবি: সংগৃহীত।

শান্তি আলোচনায় বসতে চাইলেন কেএলও প্রধান জীবন সিংহ। এই ব্যাপারে তিনি কেন্দ্রীয় সরকার ও অসম সরকারের কাছে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। দুই সরকারের তরফেই ইতিবাচক ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তার পরে বৃহস্পতিবার এক দিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে জীবনঘনিষ্ঠ কোচ ডায়নেস্টি ন্যাশনাল কাউন্সিল। অন্য দিকে, একই ভাবে টুইট করে আলোচনা প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন হিমন্তও। গত কিছু দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে জীবনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আলোচনা প্রক্রিয়া শুরুর চেষ্টা করা হচ্ছিল। সম্প্রতি রাজ্যের এক মধ্যস্থতাকারীকে জীবন জানিয়ে দেন, সময় হলে তিনিই সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। তার মধ্যেই এ দিনের বার্তা, যেখানে আলোচনা প্রক্রিয়ার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রসঙ্গই তোলা হয়নি। এ দিন কেএলও এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দেখে রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিকদের অনেকেরই দাবি, “উত্তরবঙ্গে একসময়ে কেএলওরা সক্রিয় ছিল।

Advertisement

তাই এ রাজ্যের প্রশাসনকে বাদ রাখলে শান্তি বৈঠকে সুষ্ঠু আলোচনা সম্ভব নয়।” বস্তুত, ১৯৯৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর কেএলও গঠনের সময়ে কোচ-রাজবংশী জনজাতির মানুষকে একত্র করে যে স্বাধীন কামতাপুর গঠনের দাবি তোলা হয়েছিল, তাতে নমনি অসমের চারটি জেলার সঙ্গে ছিল উত্তরবঙ্গের ছ’টি জেলাও। ২০০০ সালের গোড়ায় এই আন্দোলন তুঙ্গে ওঠে। সেই সময়ে ভুটানেও শিবির খুলেছিল কেএলও। তার পরে ‘অপারেশন অল ক্লিয়ার’ শুরু হলে বেশ কয়েক জন কেএলও জঙ্গি আত্মসমর্পণ করেন। ২০১১ সালে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। তাঁদের কেউ কেউ এখন হোমগার্ডের চাকরি করছেন রাজ্য পুলিশে। এমনই কয়েক জনের মাধ্যমে জীবনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল রাজ্য, দাবি সূত্রের।

অন্য দিকে, হিমন্ত মুখ্যমন্ত্রী হয়েই আলফা স্বাধীনের প্রধান পরেশ বরুয়াকে শান্তি আলোচনার ডাক দেন। ডাকে সাড়া দিয়ে আলফা স্বাধীন তিন দফায় সংঘর্ষ বিরতির মেয়াদ বাড়িয়েছে। অসম পুলিশের বক্তব্য, আলফার পৃষ্ঠপোষকতায় চলা কেএলও-র পক্ষেও একা লড়াই চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই তাদেরও আলোচনার রাস্তায় আসতেই হবে। সেই প্রক্রিয়াই শুরু হয়েছে। হিমন্ত জানান, কেএলও-র সদিচ্ছায় রাজ্য সরকারও আন্তরিকভাবেই সাড়া দেবে।

Advertisement

কোচ ডায়নেস্টি ন্যাশনাল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় ফোনে জানান, জীবন ইতিমধ্যেই আলোচনার ইচ্ছে প্রকাশ করে কেন্দ্র ও অসমকে বার্তা দিয়েছেন। তার ভিত্তিতেই কেন্দ্রের তরফে আলোচনা চালানোর ভার দেওয়া হয়েছে হিমন্তবিশ্ব শর্মাকে। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে কেএলও কেন এখনও কোনও বিবৃতি দেয়নি? বিশ্বজিৎ বলেন, “জীবন সিংহ চেয়েছিলেন প্রথমে রাজ্যের তরফে আমন্ত্রণ আসুক। এর পর বিষয়টি নিয়ে কোচ-রাজবংশী জনতার মনোভাব ও মতামত দেখে তবেই আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হবে।”

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটে বিজেপি পর্যুদস্ত হওয়ার পর থেকে জীবন সিংহের ভিডিয়ো বার্তা সামনে আসতে শুরু করে। সেখানে জীবন বারবার বাংলা ভাগের কথা বলতে থাকেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের নাম করেও হুঁশিয়ারি দেন। এই ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার। সূত্রের দাবি, এই সময়ই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে জীবনের সঙ্গে যোগাযোগেরও চেষ্টা শুরু হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement