কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়াতে কৃষকরা আসছেন যন্তর মন্তরে, কড়া পুলিশি নিরাপত্তা। ছবি— পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, পঞ্জাব এবং হরিয়ানা থেকে হাজার হাজার কৃষক রওনা দিয়েছেন দিল্লি অভিমুখে। যন্তর মন্তরে ধর্নারত জাতীয় স্তরের কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়াবেন তাঁরা। আর সেই কারণে যন্তর মন্তর-সহ গোটা রাজধানী দিল্লিকেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলেছে দিল্লি পুলিশ। বিজেপি সাংসদ তথা জাতীয় কুস্তি সংস্থার সর্বেসর্বা ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের গ্রেফতারির দাবিতে এখনও অনড় ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা কুস্তিগিরেরা। এ বার দেশের কৃষকরাও একই দাবির শরিক হলেন। শুধু তাই নয়, রবিবার যন্তর মন্তরে মহাপঞ্চায়েতের আসর থেকেও একই দাবি উঠতে চলেছে।
বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ প্রভাবশালী। তাঁর প্রভাবের নমুনা মিলেছিল দিল্লির পুলিশের এফআইআর নিতে না চাওয়ার মধ্যে দিয়ে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পুলিশ এফআইআর করলেও এখনও মুক্ত বিজেপি সাংসদ। তাঁর বিরুদ্ধে মহিলা কুস্তিগিরদের যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ। এমনকি এক নাবালিকা কুস্তিগিরের সঙ্গেও জঘন্য কাজের অভিযোগ রয়েছে বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম সরব হন দেশের মহিলা কুস্তিগিররা। তাঁরা পাশে পান পুরুষ কুস্তিগিরদেরও। দিল্লির যন্তর মন্তরে শুরু হয় ধর্না, অবস্থান। পুলিশ জোর করেও তাঁদের তুলে দিতে পারেনি। রবিবার তাতে অন্য মাত্রা যোগ হতে চলেছে। সংযুক্ত কিসান মোর্চা সব ভাবে নিগৃহীতাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। রবিবারই যন্তর মন্তরে বসছে মহাপঞ্চায়েত। সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগাটদের প্রত্যাশা, মহাপঞ্চায়েতের মাধ্যমে তাঁদের প্রতি অবিচারের বৃত্তান্ত ছড়িয়ে পড়বে দেশ জুড়ে।
এখানেই অবশ্য শেষ নয়। সংযুক্ত কিসান মোর্চা এই ইস্যুকে প্রতিটি ভারতবাসীর ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে দেশ জুড়ে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্রীয় লোকদল (আরএলডি) এবং ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন (টিকায়েতপন্থী) কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়িয়ে অবিলম্বে ব্রিজভূষণকে গ্রেফতারির দাবি তুলেছে। তারা দিল্লি পুলিশকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছেন। তার মধ্যে বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণকে গ্রেফতার করা না হলে দিল্লি অচল করে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাকেশ টিকায়েতরা। রবিবার কৃষক প্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দিল্লি পুলিশের কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে বিজেপি সাংসদের গ্রেফতারির দাবি জানাবেন।
এ দিকে শনিবার রাত থেকেই উত্তর ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কৃষকরা দিল্লির পথে রওনা দিয়েছেন। কত কৃষক আসতে পারেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু নিরাপত্তায় ঢিল দিতে রাজি নয় দিল্লি পুলিশ। যন্তর মন্তর-সহ রাজধানী দিল্লিকেই কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে।