খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ নিজ্জর।
ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে খলিস্তানপন্থী সন্ত্রাস। প্রশিক্ষণ শিবির তৈরি করে জঙ্গি তৈরি করছে খলিস্তান টেরর ফোর্স (কেটিএফ)। পঞ্জাবে হামলা চালানোর জন্য জোরদার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে জঙ্গি শিবিরে। কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া রাজ্যে মিশন নামে একটি শহরে এই জঙ্গি শিবির খোলা হয়েছে বলে খবর। কেটিএফ প্রধান হরদীপ নিজ্জরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক, কানাডার সরকারকে বলেছে ভারত।
পাকিস্তানেও খলিস্তানপন্থী জঙ্গিরা সক্রিয়। দল খালসা ইন্টারন্যাশনাল (ডিকেআই) নামে একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন গড়ে পাকিস্তান থেকে কাজ চালাচ্ছে তারা। পঞ্জাবকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করে পৃথক খালিস্তান তৈরির লক্ষ্যে কেটিএফ এবং ডিকেআই এখন হাত মিলিয়েছে। ডিকেআই প্রধান গজিন্দর সিংহ সঙ্গে কেটিএফ প্রধান হরদীপ নিজ্জর এখন অনেক কাজই যৌথ ভাবে চালাচ্ছেন বলে খবর পেয়েছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। সম্প্রতি লুধিয়ানার কাছে চক কালান গ্রাম থেকে মনদীপ সিংহ নামে ২৯ বছরের এক যুবককে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করার পর এই তথ্য সামনে এসেছে।
পঞ্জাবের সরকার বিদেশ মন্ত্রকে রিপোর্ট জমা দিয়ে অবিলম্বে হরদীপ নিজ্জরের গ্রেফতারির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে। পঞ্জাবের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, সে রাজ্যের পুলিশকর্তা, শিবসেনা নেতা এবং একটি বিশেষ ধর্মীয় সংগঠনের নেতাদের খুন করার ছক কষেছে কেটিএফ। তার জন্য গজিন্দর সিংহের সহায়তায় পাকিস্তান থেকে পঞ্জাবে অস্ত্র ঢোকাতে চাইছেন হরদীপ নিজ্জর। ধৃত মনদীপ জেরায় গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, হরদীপ নিজ্জর তাকে কানাডা নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে মিশন শহরের কাছেই জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরে একে-৪৭ ব্যবহার করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হত তাকে। দিনে চার ঘণ্টা করে গুলি ছোড়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। মনদীপ সিংহ ইতিমধ্যে অনেক বার হরদীপ নিজ্জরের সঙ্গে পাকিস্তান এবং কানাডা যাতায়াত করেছে বলেও জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
মায়ানমারে ঢুকে দুর্ভেদ্য জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা ভারতের, হত অন্তত ৮
পঞ্জাব পুলিশ বিদেশ মন্ত্রকে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তাতে এও জানা গিয়েছে যে মনদীপ সিংহ এ বছরের জানুয়ারিতেই কানাডা থেকে পঞ্জাবে এসেছিল। পঞ্জাবের বিভিন্ন এলাকায় সে রেকি চালায় তখন। সে সময়ই পাকিস্তান থেকে পঞ্জাবে অস্ত্র ঢোকানোর চেষ্টা করে কেটিএফ জঙ্গি মনদীপ। কিন্তু সদ্য পঠানকোট হামলার ধাক্কায় কেঁপে ওঠা পঞ্জাবের সীমান্তে তখন কঠোর নজরদারি। তাই অস্ত্র আমদানি করা যায়নি।
কানাডার সরকারকে ভারত সরকার বলেছে, অবিলম্বে হরদীপ নিজ্জরকে গ্রেফতার করে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হোক। কিন্তু নিজ্জর এখন কানাডারও হাতের বাইরে। তিনি এখন ব্রিটেনের সারে এলাকায় থাকছেন। ফলে তাঁকে গ্রেফতার করার প্রক্রিয়ায় জটিলতা আরও বেড়ে গিয়েছে।