কৃষকদের উদ্দেশে ‘উস্কানি’-বার্তা পান্নুনের? — ফাইল চিত্র।
ফসলের ন্যায্য সহায়ক মূল্য (এমএসপি)-সহ একাধিক দাবি নিয়ে কৃষক আন্দোলনের তেজ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষক আন্দোলনের জেরে বিগত চার দিন ধরে উত্তাল পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমানা। দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে পঞ্জাব-হরিয়ানার শম্ভু সীমানা। পুলিশের সঙ্গে বার বার বচসায় জড়িয়েছেন আন্দোলনকারীরা। যদিও এখনও পর্যন্ত শম্ভু সীমানা পেরিয়ে দিল্লি ঢুকতে পারেননি তাঁরা। সমস্যা সমাধানের জন্য রবিবার আবারও কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে কেন্দ্র সরকার। তার আগেই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের ‘উস্কানি’ দেওয়ার চেষ্টা করলেন নিষিদ্ধ খলিস্তানপন্থী সংগঠন শিখস ফর জাস্টিস (এসএফজে)-এর নেতা গুরুপতবন্ত সিংহ পান্নুন। পঞ্জাব-হরিয়ানা পুলিশের উপর হামলা করার জন্য অস্ত্র সরবরাহের প্রস্তাব দিয়ে একটি ভিডিয়োবার্তা প্রকাশ করেছেন তিনি। এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই নিরাপত্তা আরও আঁটসাঁট করেছে পুলিশ।
পান্নুন সর্বশেষ যে ভিডিয়োটি প্রকাশ করেছেন, সেখানে তিনি কিছু ‘উস্কানিমূলক’ কথা বলেছেন। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ভিডিয়োবার্তায় পান্নুন আন্দোলনকারী কৃষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘কর্তারপুর সীমান্তে অস্ত্র রাখা আছে। সেই অস্ত্র নিয়ে পুলিশদের উপর হামলা করুন। আপনাদের দাবি পূরণের জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করুন।’’
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এই বার্তা দিয়ে কৃষকদের উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এর প্রতিরোধ করার জন্য প্রস্তুত পুলিশ। সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ‘‘আন্দোলন করার অধিকার কৃষকদের রয়েছে। তাঁরা নিরীহ। কৃষকেরা কখনওই এসএফজে-র কথা শুনবেন না। কেন্দ্র সরকার কৃষকদের সমস্ত সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আলোচনা চলছে।’’
কেন্দ্রের কাছে নিজেদের দাবিদাওয়ার কথা পৌঁছে দিতে গত মঙ্গলবার ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচি শুরু করেছেন কৃষকরা। উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব এবং হরিয়ানা— মূলত এই তিন রাজ্যের কৃষকেরাই এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিনশোটি কৃষক সংগঠন। কৃষকদের দাবি, ফসলের ন্যায্য সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তা দিতে হবে সরকারকে। একই সঙ্গে সমস্ত কৃষিঋণ মকুব করতে হবে।
কৃষকদের এই আন্দোলন রবিবার ষষ্ঠ দিনে পড়ল। কেন্দ্রের সঙ্গে রবিবার ‘সমাধান সূত্র’ খুঁজতে আবারও বৈঠকে বসছেন কৃষকেরা। তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল, অর্জুন মুন্ডা এবং নিত্যানন্দ রাই থাকবেন এই বৈঠকে। এর আগে কৃষকদের সঙ্গে কেন্দ্রের তিনটি বৈঠক হলেও, সেগুলি থেকে কোনও রফাসূত্র মেলেনি। সূত্রের খবর, রবিবারের বৈঠকে একটি নতুন কমিটি তৈরির প্রস্তাব করা হতে পারে কেন্দ্রের তরফে। সেই কমিটিতে যেমন থাকবেন সরকারি কর্মীরা, তেমনই থাকবেন কৃষক নেতারাও। সেখানেই কৃষকদের দাবি নিয়ে পর্যালোচনা করা হতে পারে।