প্রচণ্ড পছন্দ দিল্লির, ওলি তাই বেসুর

পুণের সামরিক মহড়া থেকে শেষ মুহূর্তে নেপাল সেনাকে সরিয়ে নেওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে ওলি সরকারের এই অসন্তোষ কাজ করেছে বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য।

Advertisement

অগ্নি রায় 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:০০
Share:

পুষ্পকমল দাহাল। —ফাইল চিত্র।

লাল কার্পেট বিছিয়ে নেপালের মাওবাদী নেতা পুষ্পকমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ডকে নয়াদিল্লি আতিথ্য জানানোয় সন্দিগ্ধ এবং ক্ষুব্ধ সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি। পুণের সামরিক মহড়া থেকে শেষ মুহূর্তে নেপাল সেনাকে সরিয়ে নেওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে ওলি সরকারের এই অসন্তোষ কাজ করেছে বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য।

Advertisement

গুপ্তচর সংস্থার মাধ্যমে একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে বিদেশ মন্ত্রকে। তাতে বলা হচ্ছে, একাধিক কারণে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সংঘাতের রাস্তায় হাঁটছে কাঠমান্ডু। ওলি সন্দেহ করছেন, তাঁকে সরাতে প্রচণ্ডকে কাজে লাগাচ্ছে নয়াদিল্লি। তাই চিনকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের উপরে চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনিও।

সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ‘রাষ্ট্রীয় সফরে’ দিল্লি আসেন প্রচণ্ড। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ থেকে শুরু করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ— সবার সঙ্গেই তিনি বৈঠক করেন একেবারে রাষ্ট্রনেতার মতোই। সাউথ ব্লকও সেই পর্যায়ের গুরুত্ব দেয় তাঁকে। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, গত দশ বছরে প্রচণ্ডের সঙ্গে ভারতীয় নেতৃত্বের সম্পর্ক ক্রমশই ঘনিষ্ঠ হয়েছে। জঙ্গল থেকে মাওবাদীদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার পিছনে নয়াদিল্লির বড় ভূমিকা ছিল বলে মনে করেন নেপাল বিশেষজ্ঞেরা। এ হেন প্রচণ্ডের মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে ওলির দল ইউএমএলএন মিশে গিয়ে সরকার গড়লেও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকেই গিয়েছে।

Advertisement

ওলি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন এই অন্তর্বর্তী শর্তে যে, দু’বছর পরে প্রচণ্ডকে কুর্সি ছাড়তে হবে।

নয়াদিল্লিতে বসে, ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে একটি সাক্ষাৎকারে ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়েও সরব হয়েছেন প্রচণ্ড! বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবেই ওলি ভাল ভাবে নেননি। সেপ্টেম্বরের ৯ তারিখে দেশে ফিরেছেন প্রচণ্ড।

আর তার আগের দিন অর্থাৎ ৮ তারিখে কাঠমান্ডু থেকে ওলি জানিয়েছেন, পুণের সেনা মহড়ায় অংশ নেবেন না তাঁরা।

কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, ওলির ইউএমএলএন-কে বরাবরই ‘চিনের দিকে ঝোঁকা’ বলে মনে করে এসেছে নয়াদিল্লি। সেই কারণে প্রচণ্ডকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে মনমোহন থেকে মোদী সরকার। মদেশীয়দের বিক্ষোভের সময়েও (২০১৫-’১৬) ওলি ছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী। ভারত-বিরোধিতাকে রাষ্ট্রপুঞ্জে টেনে নিয়ে গিয়ে তিনি সেই সময়ে বলেছিলেন— দিল্লির ভূমিকা চূড়ান্ত অমানবিক, যুদ্ধের থেকেও খারাপ।

পরবর্তী সময়ে ওলি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় উপায়ন্তর না-দেখে তাঁর সঙ্গেই দ্বিপাক্ষিক দৌত্য এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে ভারতকে। কিন্তু এখন ওলির আশঙ্কা, তাঁর বিরুদ্ধে ‘যড়যন্ত্র’ করছে দিল্লি। তাই ভারতকে বেগ দিয়ে যাচ্ছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement