দিনের অালোতেও হোঁচট খেতে হয় সে অন্ধকার কুঠুরিতে! পদে-পদে সাপখোপের ভয়। পুরীর জগন্নাথদেবের সেই রত্নভাণ্ডারের সম্পদ জরিপ করতে মাস দুয়েক আগে ওড়িশা হাইকোর্টের নির্দেশে ভিতরে ঢুকেছিল সেবায়েত-আমলা-পুলিশে ভরপুর একটি বিশেষ কমিটি।
তার মাসদুয়েক বাদে চাউর হয়েছে, রত্নভাণ্ডারের চাবিটাই গায়েব! ১৯৭৮-এ রত্নভাণ্ডারের দরজা খুলে শেষ বার জরিপ হয়। কিন্তু তার পরে সে-চাবির গোছ কেমন দেখতে তা-ই কার্যত জানা ছিল না। তবু চাবি হারানোর খবর ছড়াতেই বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। সোমবারই আইনমন্ত্রী প্রতাপ জেনা এবং জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সেরে এই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন নবীন। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওড়িশা হাইকোর্টের এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে। ১৪ জুলাই রথযাত্রা উৎসবের আগেই তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
চাবিটি কী ভাবে উধাও হল, তা পরিষ্কার নয়! গত ৪ এপ্রিল স্নান সেরে শুদ্ধ শরীরে গামছামাত্র ধারণ করে রত্নভাণ্ডারে পরিদর্শক কমিটির ঢোকার সময়েই না কি গোলযোগ নজরে এসেছিল। পুরীর কালেক্টর অরবিন্দ অগ্রবালও কবুল করেছেন, তাঁর হাতে পরিদর্শন-পর্বের পরে কোনও চাবি জমা পড়েনি। তবে পরিদর্শনের আগেও কেউ চাবিটা দেখেছিল কি না, তা বোধ হয় জগন্নাথই জানেন। সার্চলাইট জ্বেলে নমো-নমো করে রত্নভাণ্ডার পরিদর্শন হয়। জগন্নাথ-বলভদ্র-সুভদ্রার বিপুল অলঙ্কাররাশির খতিয়ান অসম্পূর্ণ থাকায় তখনও কথা উঠেছিল।
আরও পড়ুন: সন্ধান রথের, মিলল শিরোস্ত্রাণ, খননে নতুন দিশা
এ যাত্রা, মন্দির প্রশাসনের বৈঠক থেকেই ফের চাবি-রহস্য জানাজানি হয়। রথের সময়ে জগন্নাথের সেবায়েত দয়িতাপতিদের সমিতির কর্তা রাজেশ দয়িতাপতির দাবি, ‘‘মন্দিরের অভিভাবক গজপতি মহারাজাকেই বলতে হবে কী হয়েছে! তাঁর কাছেই তো চাবি থাকার কথা।’’
এ নিয়ে আসরে নেমেছে রাজনৈতিক দলগুলি। ক’দিন আগে জগন্নাথদেবের নিত্যভোগে অনিয়ম নিয়ে তুলকালাম হয়। এর পরেই চাবি-বিভ্রাট। ফলে, মুখ্যমন্ত্রীকে বিপাকে ফেলতে তাঁর বিবৃতি দাবি করেছে রাজ্যের বিরোধী বিজেপি ও কংগ্রেস। তাদের দাবি, একটি ফৌজদারি মামলাও দায়ের করুক সরকার।