পাঠ্যক্রম থেকে নির্দিষ্ট বিষয় বাদ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ কেরল সরকার। ফাইল ছবি।
একের পর এক পাঠ্যবই থেকে নির্দিষ্ট বিষয় বাদ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব কেরল সরকার। তাদের হুঁশিয়ারি, পড়ুয়াদের পাঠ্যবই তারা এ বার নিজে থেকেই ছাপাতে শুরু করবে। কেন্দ্রের ভরসায় থাকবে না।
কেরলের শিক্ষামন্ত্রী ভি শিবনকুট্টী শুক্রবার কোচিতে একটি জনসভায় গিয়ে স্বতন্ত্র ভাবে পাঠ্যবই ছাপানোর কথা বলেছেন। তবে এ বিষয়ে এখনও সরকারি ভাবে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, ‘‘কেরল সর্বদাই সাংবিধানিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ বজায় রেখে চলবে। আমরা বিশ্বাস করি, যে বিষয়গুলি পাঠ্যক্রম থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে, সেগুলি স্কুলশিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ। এ ভাবে ইতিহাসকে বিকৃত করা যায় না। কী ভাবে বাদ দেওয়া বিষয়গুলি ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো যায়, আমরা তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছি। আমরা নিজেরাও বই ছাপাতে পারি।’’
এনসিইআরটি সম্প্রতি একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যক্রম থেকে মোগল যুগ সংক্রান্ত অধ্যায় বাদ দিয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে বাদ পড়েছে গান্ধীহত্যার প্রসঙ্গ। এ ছাড়া, এনসিইআরটি-র পাঠ্যসূচি থেকে গুজরাত হিংসার প্রসঙ্গও বাদ পড়েছে। দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বই থেকে ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত্বের বিষয়টিও বাদ দেওয়া হয়েছে। এই পাঠ্যক্রমের সমালোচনা চলছে নানা মহলে।
কেরলের শিক্ষামন্ত্রী জনসভায় বলেন, ‘‘এনসিইআরটির এই পাঠ্যক্রমের বিরোধিতা করছেন অধিকাংশ শিক্ষক। এটি কোনও মতেই মেনে নেওয়া যায় না। এই পরিস্থিতি যদি চলতে থাকে, তাহলে রাজ্য সরকার নিজ উদ্যোগে নতুন পাঠ্যবই ছাপাতে বাধ্য হবে। কেন্দ্র নিজস্ব ভাবনাকে রাজ্যগুলির উপর এ ভাবে চাপিয়ে দিতে পারে না। আমরা বিকল্প পথ অবলম্বন করব।’’
এর আগে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও কেন্দ্রের এই শিক্ষানীতি এবং পাঠ্যক্রমে কাটছাঁটের বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি টুইটে বলেছিলেন, ‘‘স্কুলের পাঠ্যবইয়ের গেরুয়াকরণই কেন্দ্রের লক্ষ্য। সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তির এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করা উচিত।’’