ফাইল চিত্র।
বার্ড ফ্লু আতঙ্ক তীব্র হচ্ছে দেশ জুড়ে। এ বার বার্ড ফ্লু-কে ‘রাজ্যের বিপর্যয়’ ঘোষণা করল কেরল সরকার। ওই রাজ্যের দু’টি জেলায় জারি করা হল সতর্কতা। কোয়াট্টাম ও আলাপ্পুঝা জেলা থেকে প্রাথমিক ভাবে হাঁসের মড়কের খবর এসেছিল। ওই দুই জেলাতেই সতর্কতা জারি করেছে কেরল সরকার। তবে মানুষের শরীরে এই রোগ সংক্রমিত হতে পারে না বলেই অভয় দিয়েছে প্রশাসন।
বার্ড ফ্লু রুখতে মধ্যপ্রদেশেও কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। সেখানে মান্দসৌরের প্রশাসন নির্দেশ দিয়েছে এলাকায় সমস্ত মুরগির দোকান ও ডিম বিক্রি ১৫ দিন বন্ধ রাখতে। এই রাজ্যে কাকের মড়কের খবর পাওয়া গিয়েছিল। যে সব কাকের শরীরে বার্ড ফ্লু-র ভাইরাস পাওয়া যায়। এ ছাড়াও ইনদওরে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের পক্ষ থেকে ‘অ্যাভিয়ান ফ্লু’ বা বার্ড ফ্লু-কে গুরুত্ব দিয়ে দেখার অনুরোধ করা হয়েছে। কোনও কোনও সূত্র বলছে, এখনও পর্যন্ত ৫ রাজ্য। হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও কেরলে বার্ড ফ্লু-এর সংক্রমণের চিহ্ন মিলেছে। কেউ কেউ গুজরাতেও বার্ড ফ্লু সংক্রমণের কথা বলেছেন।
হিমাচল প্রদেশে এখনও পর্যন্ত ২ হাজার ৩০০ পরিযায়ী পাখির মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে বেশিরভাগই হাঁস ও বাদামি মাথা গাঙচিল রয়েছে। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শীতকালে বিপুল সংখ্যায় পরিয়ায়ী পাখি ভারতে আসে। কোনও ক্ষেত্রে যদি বার্ড ফ্লু-র সংক্রমণের কোনও খবর পাওয়া যায় বা উদাহরণ মেলে, সঙ্গে সঙ্গে তা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জানাতে হবে।
কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা রাজ্য স্তরে বন দফতরের প্রধান, সংরক্ষণ আধিকারিক-সহ উচ্চপদস্থ কর্তাদের জানিয়েছি, যাতে কোনও বড় সংখ্যক পাখি মৃত্যুর খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে যেন তা কেন্দ্রীয় সরকারকে জানানো হয়।’’
কয়েকদিন আগেই রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে কাকের মড়ক দেখা গিয়েছিল। সেখানেও পরীক্ষা করতে বেরিয়ে আসে, বার্ড ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়েই কাকের মৃত্যু হচ্ছে। রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশ মিলিয়ে প্রায় ৩০০ কাকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এই ২ রাজ্যের রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এলাকা নির্দিষ্ট করে সেখানে বার্ড ফ্লু আক্রান্ত চিহ্নিত করার কাজ করতে চেষ্টা করছে প্রশাসন।
হিমাচলপ্রদেশেও পরিস্থিতি ক্রমে কঠিন হয়েছে। পরিযায়ী পাখির মধ্যে বার্ড ফ্লু-র সংক্রমণ দেখা দিয়েছে, যার ফলে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৭০০ পরিযায়ী পাখির মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। সেই পরিযায়ী পক্ষীকূলের মৃত্যু যে বার্ড ফ্লু-তেই হয়েছে, তা নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। সে রাজ্যের বন দফতরের সংরক্ষণ বিভাগের প্রধান অর্চনা শর্মা জানিয়েছেন, বরেলির ভারতীয় পশুপালন গবেষণা কেন্দ্রের পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বার্ড ফ্লু-রয়েছে এই পাখিদের শরীরে। যদিও একেবারে নিশ্চিত হতে ভোপালে প্রধান পরীক্ষা কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। খবর দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকেও।
অন্য দিকে, হিমাচলের কাংড়া জেলায় সংক্রমণ এড়াতে ইতিমধ্যেই মুরগি, মাছ, মুরগির ডিম বিক্রির উপর নিধেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। জেলার ৪টি সাবডিভিশনে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মরার উপর খাঁড়ার ঘা-এর মতো করোনা সংক্রমণের মধ্যে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় রীতিমতো চিন্তিত হয়ে পড়েছে প্রশাসন। এখনও পর্যন্ত ৪ রাজ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, রোগ যে আরও ছড়িয়ে পড়বে না, তেমনও কোনও নিশ্চয়তা নেই।
আরও পড়ুন: করোনার প্রভাব পড়বে না বরিসের ভারত সফরে, বলছে সূত্র
আরও পড়ুন: দেরি করে বাড়ি ফেরায় ঘুমন্ত স্বামীর মুখে ফুটন্ত তেল ঢাললেন স্ত্রী!