সরকার, মুখ্যমন্ত্রী বা মন্ত্রীদের ‘‘মর্যাদাহানিকর’’ খবর প্রকাশ হলেই সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল অরবিন্দ কেজরীবালের সরকার। কোনও আমলা বা মন্ত্রী যদি মনে করেন তাঁর বিরুদ্ধে তেমন খবর প্রকাশিত হয়েছে তবে তিনিই অভিযোগ করতে পারেন।
ক্ষমতায় আসার পর থেকে মূলত নেতিবাচক কারণেই খবরের শিরোনামে বেশি রয়েছেন অরবিন্দ কেজরীবাল ও তাঁর দল আম আদমি পার্টির নেতারা। দলীয় জনসভায় কৃষকের আত্মহত্যা, দিল্লির আইনমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ তোমারের ভূয়ো ডিগ্রি কেনার অভিযোগ, দলের শীর্ষ নেতা কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে আপেরই এক মহিলা কর্মীর অবৈধ সম্পর্ক-নানা ঘটনায় ক্রমাগত জেরবার হতে হচ্ছে আপ নেতৃত্বকে। এই ঘটনাগুলির সামনে আসার পিছনে সংবাদমাধ্যমের ইচ্ছাকৃত হাত রয়েছে বলেই মনে করছে আপ শিবির। খোদ কেজরীবাল দিন কয়েক আগে প্রকাশ্যে বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যম আপ ও দিল্লি সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে সক্রিয় রয়েছে। তাঁর মতে, সুপারি কিলারের ভূমিকা নিয়েছে সংবাদমাধ্যম। যাকে রসদ জোগাচ্ছে বিরোধী দলগুলি।’’
তাই এ বার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কার্যত সম্মুখসমরে নামল কেজরীবাল সরকার। দিল্লির তথ্য দফতরের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, কোনও আমলা বা মন্ত্রী যদি মনে করেন তাঁর মর্যাদাহানিকর কোনও খবর প্রকাশিত হয়েছ তবে তিনি সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারেন। স্বরাষ্ট্রসচিব অভিযোগটির গুরুত্ব খতিয়ে দেখে আইন দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নিতে পারবেন।
প্রত্যাশিত ভাবেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। সরকারের ব্যর্থতা সংবাদমাধ্যম তুলে ধরছে বলেই তাদের মুখ বন্ধ করতে কেজরীবাল ও তাঁর দলবল মাঠে নেমেছেন বলেই মত দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অজয় মাকেনের। তিনি বলেন, ‘‘কেজরীবালের উত্থানের পিছনে সংবাদমাধ্যমের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু ক্ষমতায় এসেই প্রথমে দিল্লি সচিবালয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছেন কেজরীবাল।’’ বিজেপি মুখপাত্র জিভিএল নরসিংহ রাও বলেন, ‘‘একটি মানহানির মামলায় খোদ কেজরীবাল সাফাইতে সুপ্রিম কোর্টের কাছে নিজের বাকস্বাধীনতার হয়ে সওয়াল করেছেন। আর সেই কেজরীবালই সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছেন।’’