CAA

রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে আক্রান্ত স্কুলের খুদেরাও!

স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, গত কালও বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত নয় থেকে বারো বছর বয়সি প্রায় ৬০ জন খুদে পড়ুয়াকে একটানা জিজ্ঞাসাবাদ করেন ডিএসপি-সহ তিন পুলিশকর্মী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৩৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিজেপি শাসিত কর্নাটকের বিদরের একটি স্কুলে সিএএ-বিরোধী নাটক মঞ্চস্থ করায় চার-পাঁচ দিন ধরে চরম পুলিশি হেনস্থার শিকার সেখানকার খুদে পড়ুয়ারা। স্কুলটির প্রধান শিক্ষিকা এবং এক খুদে পড়ুয়ার মাকে আগেই গ্রেফতার করেছে রাজ্য পুলিশ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করে গত চার-পাঁচ দিন লাগাতার স্কুলের খুদে পড়ুয়াদের জেরা করে চলেছে পুলিশ। স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, গত কালও বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত নয় থেকে বারো বছর বয়সি প্রায় ৬০ জন খুদে পড়ুয়াকে একটানা জিজ্ঞাসাবাদ করেন ডিএসপি-সহ তিন পুলিশকর্মী।

Advertisement

বিজেপি শাসিত কর্নাটকের একটি স্কুলে গত ডিসেম্বরেই বাবরি মসজিদ ভাঙা নিয়ে একটি নাটক মঞ্চস্থ করে পড়ুয়ারা। সেই ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় বইলেও রাজ্য সরকার বা শিক্ষা দফতর কোনও পদক্ষেপ করেনি। বরং বিজেপির নেতামন্ত্রীরা প্রশংসাই করেছিলেন। এ ক্ষেত্রে ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটেছে। সূত্রের খবর, স্কুলের চতুর্থ, পঞ্চম এবং ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়াদের অভিনীত ওই নাটকটি গত ২৬ জানুয়ারি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরেই বিদর নিউটাউন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় এবিভিপি কর্মী নীলেশ রক্ষালা। তাঁর অভিযোগ, পড়ুয়াদের ‘শিখিয়ে-পড়িয়ে’ এই নাটকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অবমাননা করার পাশাপাশি এনআরসি-সিএএ নিয়ে অপপ্রচার করা হয়েছে। তার পরেই কোমর বেঁধে নামে ইয়েদুরাপ্পার পুলিশ। ওই দিনই ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয় স্কুলের নামে। স্কুল কর্তৃপক্ষের কয়েক জন এবং কিছু পড়ুয়ার অভিভাবককে জিজ্ঞাসাবাদের পরে চার দিনের মাথায় গ্রেফতার করা হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ফরিদা বেগমকে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, পড়ুয়াদের লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে চাইছে, প্রধানমন্ত্রীকে অবমাননা বা আইন নিয়ে অপপ্রচারের এ সব সংলাপ স্কুলের কে বা কারা তাদের মুখস্থ করিয়েছিল? প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে ধৃত অভিভাবিকা নাজবুন্নিসার পুলিশি হেফাজত চেয়ে ৩১ জানুয়ারি কোর্টে আর্জিও জানিয়েছিল পুলিশ। সংবাদমাধ্যমের হাতে থাকা ওই আর্জির কপি বলছে, বছর নয়ের ওই পড়ুয়া পুলিশকে জানিয়েছে, নাটকের সংলাপ তাকে শিখিয়েছেন মা।

পুলিশের এমন আচরণে হতবাক অনেকেই। একটা নাটক নিয়ে যে ভাবে শিক্ষকশিক্ষিকা-অভিভাবকদের সঙ্গে খুদে পড়ুয়াদের হেনস্থা করা হচ্ছে, তাতে অশনি সংকেত দেখছে নেট-দুনিয়াও। বিজেপি জমানায় সব ক্ষেত্রেই বিরোধীদের হয় ভয় দেখিয়ে, নয় খুন করে চুপ করানোর কৌশল নেওয়া হচ্ছে বলে বারবার অভিযোগ উঠছে। কাল জেলবন্দি নাজবুন্নিসার সঙ্গে দেখা করেন এমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, সন্ত্রস্ত ওই মহিলা এখন মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement