কেবিসি সিজন-৫ এর বিজেতা সুশীল কুমার। ফাইল চিত্র।
‘কউন বনেগা করোড়পতি’ (কেবিসি)-র সিজন-ফাইভের বিজেতা সুশীল কুমারকে মনে আছে? পাঁচ কোটি টাকা জিতে যিনি সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন গোটা দেশে! কেমন আছেন তিনি? কোথায় আছেন, কী-ই বা করছেন? কেবিসি-র সিজন ১৩ শুরু হতেই ফের আলোচনার বৃত্তে বিহারের বাসিন্দা ‘করোড়পতি’ সুশীল।
বিহারের মোতিহারি জেলার এক মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে সুশীল। দেশের প্রথম পাঁচ কোটি জয়ী কেবিসি প্রতিযোগী। সুশীলের দাবি, তাঁর জীবনের সবচেয়ে দুঃসহ সময় শুরু হয়েছে ওই পাঁচ কোটি টাকা জেতার পর থেকেই। ওই টাকাই তাঁর জীবনে অন্ধকার নিয়ে এসেছে। সম্প্রতি নেটমাধ্যমে তাঁর ওই দুঃসময়ের গল্পই তুলে ধরেছেন সুশীল।
কেবিসি সিজন-ফাইভের বিজেতা বলেন, ‘‘২০১৫-১৬ সাল আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময় ছিল। সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ছিল।’’ ‘খ্যাতনামী’ হওয়ার দরুণ মাসের ১০-১৫ দিন নানা অনুষ্ঠান করেই কেটে যেত তাঁর। এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু এর পরই সুশীল ঠিক করেন ব্যবসা করবেন। হাতে প্রচুর টাকা থাকায় একের পর এক ব্যবসায় টাকা ঢেলেছেন, কিন্তু সবক’টিতেই ব্যর্থ হয়েছেন। শুধু তাই নয় বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা করে খরচ করা শুরু করেন। অনেকেই এই উদারতার সুযোগ নিয়ে তাঁকে প্রতারণা করেন। এ ভাবেই ক্রমে টাকার পরিমাণ কমতে শুরু করে। যথেচ্ছ ভাবে টাকা খরচের বিষয়টি নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি শুরু হয়। এক সময় তা চরমে পৌঁছয়। সুশীল বলেন, ‘‘টাকার নেশায় এমন বুঁদ হয়ে গিয়েছিলাম কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল সব গুলিয়ে গিয়েছিল।’’
এর পর দিল্লিতে গিয়ে গাড়ির ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু সেটাও ডুবে যায়। ক্রমে সিগারেট এবং মদের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি।
স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলার পর মুম্বইয়ে পাড়ি দেন সুশীল। ছবি পরিচালনার চিন্তাভাবনা শুরু করেন। কিন্তু এ বিষয়ে বিশেষ অভিজ্ঞতা না থাকায় এক প্রযোজক তাঁকে টিভি সিরিয়াল নিয়ে কাজ করতে পরামর্শ দেন। জনপ্রিয় টিভি সিরিয়ালের প্রযোজনা শুরু করেন। কিন্তু সেটা টেকেনি। শেষমেশ সব ছেড়ে দিয়ে ফের নিজের শহরে ফিরে আসেন। সুশীল বলেন, ‘‘ছবি পরিচালনা করা আমার কাজ নয়, এটা বুঝে শহরে ফিরে আসি।’’ এর পরই শিক্ষক হওয়ার জন্য পড়াশোনা শুরু করেন। পাশ করে সুশীল এখন শিক্ষকতা করছেন এবং যথেষ্ট ভালই আছেন।