Pahalgam Terror Attack

‘পর্যটক ছাড়া আমরা অসম্পূর্ণ’! আহতদের কাঁধে করে হাসপাতালে পৌঁছে দেন কাশ্মীরি শালবিক্রেতা

কাশ্মীরে জঙ্গিদের হত্যালীলার পর পর্যটন ঘিরে উদ্বেগ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। কাশ্মীরের জীবন-জীবিকা অনেকাংশে নির্ভর করে পর্যটনের উপর। ঘটনার দিন আহতদের কাঁধে করে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া কাশ্মীরি শালবিক্রেতার কথাতেও উঠে এল সেই প্রসঙ্গ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:১৯
Share:
কাশ্মীরী শালবিক্রেতা সাজাদ আহমেদ ভাট। (ইনসেটে) মঙ্গলবার জঙ্গিদের হত্যালীলার পরে আহতদের হাসপাতালে পৌঁছে দিচ্ছেন সাজাদ।

কাশ্মীরী শালবিক্রেতা সাজাদ আহমেদ ভাট। (ইনসেটে) মঙ্গলবার জঙ্গিদের হত্যালীলার পরে আহতদের হাসপাতালে পৌঁছে দিচ্ছেন সাজাদ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

গত ৪৮ ঘণ্টায় বদলে গিয়েছে কাশ্মীর উপত্যকার ছবি। পর্যটকদের একটি বড় অংশ ব্যস্ত হয়ে গিয়েছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফেরার জন্য। যাঁদের আগামী দিনে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল, তাঁরাও অনেকে পিছিয়ে আসতে শুরু করেছেন। ‘বুকিং’ বাতিল করছেন অনেকে। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের হত্যালীলায় অন্তত ২৫ পর্যটক এবং এক স্থানীয়ের মৃত্যুর পরে উপত্যকার পর্যটন ধাক্কা খেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। মঙ্গলবার জঙ্গিদের নির্বিচারে গুলির পরে আহতদের উদ্ধার করতে এগিয়ে এসেছিলেন স্থানীয় অনেকে। তাঁদের মধ্যেই এক জন সাজাদ আহমেদ ভাট। পেশায় কাশ্মীরি শালবিক্রেতা। জঙ্গিদের হত্যালীলার পরে এক আহতকে কাঁধে করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছেন তিনি।

Advertisement

উপত্যকার জীবন-জীবিকার জন্য পর্যটকেরা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বিলক্ষণ বোঝেন সাজাদ। পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় গোলাগুলি থেমে যাওয়ার পরে সাজাদ এবং আরও অনেকে পৌঁছে গিয়েছিলেন আহত পর্যটকদের উদ্ধার করতে। সাজাদের কথায়, “ওদের (পর্যটক) ছাড়া আমাদের জীবন অসম্পূর্ণ।” সংবাদ সংস্থা এএনআইকে ওই শালবিক্রেতা জানান, ওই দিন তাঁরা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছোন তখন দুপুর প্রায় তিনটে। পর্যটকদের জন্য জলের ব্যবস্থা করেন তাঁরা। যাঁরা হাঁটার মতো অবস্থায় ছিলেন না, তাঁদের কাঁধে করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তিনি আরও বলেন, “যখন আমি পর্যটকদের কাঁদতে দেখছিলাম, আমার চোখেও জল চলে আসছিল। তাঁরা (কাশ্মীরে) আসেন বলেই আমাদের ঘরে আলো জ্বলে— তাঁদের ছাড়া আমাদের জীবন অসম্পূর্ণ।”

মঙ্গলবার জঙ্গিদের হত্যালীলার বলি ২৬ জনের মধ্যে ২৫ জনই ছিলেন পর্যটক। শুধুমাত্র এক জন ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা। পহেলগাঁওয়ের বাসিন্দা আদিল হোসেন সে দিন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাঁকেও হত্যা করে জঙ্গিরা। পহেলগাঁওয়ে আসা পর্যটকদের ঘোড়ার পিঠে চাপিয়ে ঘোরাতেন আদিল। বস্তুত, মঙ্গলবার রাত থেকে পহেলগাঁওয়ের রাস্তায় প্রতিবাদে নেমেছেন বহু স্থানীয় মানুষ। মোমবাতি নিয়ে মিছিল করছেন তাঁরা। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে, নিরীহদের হত্যার বিরুদ্ধে সেই মিছিল থেকে উঠছে স্লোগান। কাশ্মীরিরা বলছেন, ‘হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ’, ‘আমরা ভারতীয়’।

Advertisement

পহেলগাঁওয়ের ঘটনার প্রতিবাদে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এগিয়ে আসার জন্য কাশ্মীরের সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। তিনিও দেশবাসীর উদ্দেশে অনুরোধ করেছেন যাতে সাধারণ কাশ্মীরিদের ‘শত্রু’ না-ভাবা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement