Jammu & Kashmir

কাশ্মীরি বিধায়কের গাড়ি নিয়েই অমরনাথে তীর্থযাত্রীদের উপর হামলা, দাবি এনআইএ-র

নাশকতায় অন্তত আট জন তীর্থযাত্রী প্রাণ হারিয়েছিলেন, যাঁদের অধিকাংশই গুজরাতের বাসিন্দা। তীর্থযাত্রীদের উপর এই হামলার ঘটনায় কেঁপে উঠেছিল গোটা দেশ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৯ ১৪:০৩
Share:

অমরনাথের পথে তীর্থযাত্রীরা। ফাইল চিত্র।

২০১৭ সালে অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের উপর হামলার ঘটনায় ব্যবহার করা হয়েছিল কাশ্মীরের পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি)-র এক বিধায়কের গাড়ি। শুধু তাই নয়, এই বিধায়কের সঙ্গে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গির যোগ থাকার বিষয়টিও উঠে এসেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র তদন্তে। অমরনাথ হামলার সঙ্গে পিডিপি বিধায়ক আয়াজ আহমেদ মিরের যুক্ত থাকার বিষয়টি জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশকেও জানিয়েছে এনআইএ।

Advertisement

২০১৭ সালের জুলাই মাসে দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগে হামলা চালানো হয়েছিল অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের উপর। শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়কে তীর্থযাত্রীদের একটি বাস আটকে বাইরে থেকে গুলিবর্ষণ করেছিল জঙ্গিরা। এই নাশকতায় অন্তত আট জন তীর্থযাত্রী প্রাণ হারিয়েছিলেন, যাঁদের অধিকাংশই গুজরাতের বাসিন্দা। তীর্থযাত্রীদের উপর এই হামলার ঘটনায় কেঁপে উঠেছিল গোটা দেশ।

অমরনাথ হামলার সময় জম্মু ও কাশ্মীরে ছিল পিডিপি-বিজেপি জোট সরকার। মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মেহবুবা মুফতি। এনএইএ তদন্তে তাঁর দলেরই এক বিধায়কের সঙ্গে অমরনাথ হামলার যোগসূত্র পাওয়া গেল। অভিযুক্ত বিধায়ক আয়াজ আহমেদ মির দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপিয়ান কেন্দ্রের বিধায়ক। শুধু অমরনাথ হামলাই নয়, জঙ্গিদের সঙ্গে তার আরও নানা যোগের বিষয় উঠে এল এনআইএ তদন্তে। শুধু বিধায়কই নন, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের একাধিক ব্যক্তিও এই হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত বলে জানিয়েছে এনআইএ।

Advertisement

আরও পড়ুন: গাড়ি ঘিরে লুঠপাট চালাল ‘ঠক ঠক’ গ্যাং, গুরুতর অসুস্থ মনোজ প্রভাকরের স্ত্রী

অমরনাথ হামলার পরপরই গ্রেফতার করা হয়েছিল আয়াজ মিরের গাড়ির চালক তৌসিফ আহমেদকে। তাকে গাড়ির চালক হিসেবে নিয়োগ করেছিল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের নিরাপত্তা বিষয়ক দফতরই। এনআইএ তদন্তে উঠে এসেছে আয়াজ মিরের নিরাপত্তারক্ষী আদিল বশিরের সন্দেহজনক গতিবিধির কথাও। আদিল বশিরকেও নিয়োগ করেছিল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশই। গত বছরের সেপ্টেম্বরেই জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের অস্ত্রাগার থেকে সাতটি রাইফেল এবং একটি পিস্তল নিয়ে চম্পট দেয় সে। কিছু দিন পরেই সে জঙ্গিদের খাতায় নাম লেখায়। এখনও ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গিদের তালিকায় আছে বশিরের নাম।

এনআইএ তদন্তে জানা গিয়েছে, বশির দীর্ঘদিন পিডিপি-র রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল। পিডিপি বিধায়ক আয়াজ মিরের ছত্রছায়াতেই বেড়ে উঠেছে সে। আয়াজ মিরের হয়ে নির্বাচনী প্রচারের দায়িত্বও ছিল তারই হাতে। গত বছরও নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে নিহত এক জঙ্গিকে ‘শহীদ’ মর্যাদা দিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন আয়াজ মির।

আরও পড়ুন: মুকেশ অম্বানীর আয় চিকিৎসা-স্বাস্থ্য খাতে কেন্দ্র-রাজ্যের মিলিত বাজেটের চেয়ে বেশি!

অমরনাথ হামলা সহ বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন পিডিপি বিধায়ক আয়াজ মিরের যোগাযোগের বিষয়টি জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশকে জানিয়েছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা। বিতর্কিত বিধায়ক আয়াজ মির অবশ্য সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, তাঁকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘ তদন্ত সংস্থা তার কাজ করলে আমার আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাতে আমার তদন্তকারী সংস্থার উপর বিশ্বাস চলে যাচ্ছে।’’ গত বছরের নভেম্বরেও পিডিপি-র তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, তাদের দলীয় বিধায়ক আয়াজ মিরকে বিজেপিতে নাম লেখানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।

এনআইএ-র রিপোর্ট পাওয়ার পর জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ জানিয়েছে, আয়াজ মিরের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে। তার বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।

(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement