প্রতীকী চিত্র।
রাত পোহালেই মহারণ। বিধানসভা ভোটের জন্য প্রস্তুত কর্নাটক। কী হবে এবার? কংগ্রেসের হাতেই থাকবে শিল্পে উন্নত এই দক্ষিণী রাজ্য?নাকি ফুটবে পদ্মফুল? মনে করা হচ্ছে, এ লড়াই যত না কংগ্রেসের সিদ্দারামাইয়া ও বিজেপি-র ইয়েদুরাপ্পার, তার চাইতে অনেক বেশি করে মোদী এবং রাহুল গাঁধীর। এই ভোটের ফল দেখে যদি লোকসভা ভোট এগিয়ে আনেন মোদী, তাহলে কিন্তু অবাক হওয়ার কিচ্ছু থাকবে না।
ভোটের কর্নাটক আসলে ত্রিমুখী লড়াইয়ের রঙ্গমঞ্চ।রয়েছে কংগ্রেস ও বিজেপি। শক্তিতে কম নয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়ার দল জেডি(এস)। ভোটের আগে যতগুলো জনমত সমীক্ষা হয়েছে, তার মাত্র একটাতেইসরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা পেয়েছে কংগ্রেস, বাকিগুলোতে তারা এগিয়ে ঠিকই। কিন্তু ম্যাজিক ফিগারের চেয়ে বেশ খানিকটা দূরে। সাধারণত লড়াই যখন মূলত দুই দলের মধ্যে, সেই সময় তৃতীয় দলটি যে কোনও এক পক্ষের সঙ্গে হাত মেলাবে, তা ধরে নেওয়া হয়।মনে করা হচ্ছে, ভোটের ফল ত্রিশঙ্কু হলে ‘কিং মেকার’ হয়ে উঠতে পারে দেবেগৌড়ার জেডি(এস)।
কিন্তু কোন দিকে যাবেন দেবেগৌড়া?সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে জেডি(এস)-এর সম্পর্কটা যে সাপে নেউলের চেয়েও তিক্ত। ভোটের প্রচারে জেডি(এস)-কে বিজেপির বি-টিমের তকমা দিয়েছে কংগ্রেস। অন্যদিকে, এক বারের জন্য হলেও ভোটের প্রচারে দেবেগৌড়ার প্রশংসা করে জল্পনা বাড়িয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু জেডি(এস) কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে রহস্য রয়েই গিয়েছে।
কর্নাটকে ভোটের প্রচারে মোদী এসেছেন বারবার, পিছিয়ে থাকেননি রাহুল গাঁধীও। কিন্তু এর পরেও দু’দলের মধ্যে পার্থক্যটা চোখে পড়ার মতো। কংগ্রেসকে টক্কর দেওয়ার জন্য বিজেপি যখন অমিত শাহ, সুষমা স্বরাজ, রাজনাথ সিংহ, যোগী আদিত্যনাথের মতো নেতাদের প্রচারে নামিয়েছে, সে সময় সিদ্দারামাইয়া কিন্তু তাদের বহিরাগত তকমা দিয়ে তুলে ধরেছেন কন্নড় আদর্শের কথা। সিদ্দারামাইয়া যেমন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিজের সাফল্যের কথা তুলে ধরেছেন, সেরকমই বোঝাতে চেষ্টা করেছেন, তিনি সত্যিকারের ভূমিপুত্র।কন্নড় ভাবাবাগের একমাত্র প্রতিনিধি।
আরও পড়ুন: কন্নড়-ভূমে জাতের অঙ্কই ভাগ্যবিধাতা
আরও পড়ুন: নমাজ নিয়ে ডিগবাজি খট্টরের, কিন্তু বিপাকে ফেললেন আরেক মন্ত্রী
বিজেপি-র মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ইয়েদুরাপ্পাকে মুখ ফস্কে ‘সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত’ হলে বিড়ম্বনা বাড়িয়েছিলেন অমিত শাহ। ভোটের প্রচারে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেই কথাটাই সুকৌশলে বলে গিয়েছে কংগ্রেস। সাধারণ মানুষকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, ইয়েদুরাপ্পা জমানায় ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের কথা। তার উপর খনি কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত রেড্ডি ভাইদের অর্থাত্ সোমশেখর রেড্ডি, করুণাকর রেড্ডিকে প্রার্থী করায় বাড়তি সুযোগ পেয়ে গিয়েছে কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, কর্নাটকের বিজেপি মানেই দুর্নীতি।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, কর্নাটকের ভোটলোকসভা ভোটের সেমিফাইনালহতে চলেছে। আগের বেশ কয়েকটা উপনির্বাচনে ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। এর পরেও যদিকর্নাটকের ভোটের ফল তেমন না হয়, তবে হয়তো পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় লোকসভা ভোট এগিয়ে আনতে পারেন মোদী।আর যদি ফল ভাল হয়, তবেও হয়তো কর্নাটক ভোটের ইতিবাচক ফলকে ব্যবহারের জন্য তিনি লোকসভা ভোট এগিয়ে আনতে পারেন। অতএব, কর্নাটক নিয়ে অনেক অঙ্কই কষে চলেছেন মোদী। সেই অঙ্ক কতটা মিলল, তা জানা যাবে ১৫ মে অর্থাত্ গণনার দিনটাতেই।