লোকায়ুক্ত বিচারপতি পি বিশ্বনাথ শেট্টি। ছবি: পিটিআই।
সশস্ত্র হামলা হল কর্নাটকের লোকায়ুক্তের উপরে। পাঁচ বার ছুরি দিয়ে আঘাত করা হল রাজ্যের শীর্ষ দুর্নীতি দমন আধিকারিককে। বুধবার বেঙ্গালুরুতে লোকায়ুক্ত পি বিশ্বনাথ শেট্টির অফিসে ঢুকে তাঁর উপরে হামলা চালানো হয়েছে। হামলার সময়ে তাঁর অফিসে যথেষ্ট ভিড়ও ছিল। সর্বসমক্ষে লোকায়ুক্তের উপরে এই হামলার জেরে নিরাপত্তার ফাঁক নিয়ে প্রবল সমালোচনা শুরু হয়েছে।
তেজরাজ শর্মা নামে টুমকুরের এক বাসিন্দা বিচারপতি শেট্টির উপরে হামলা চালিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। বছর তেত্রিশের তেজরাজ পেশায় বাস কন্ডাক্টর। লোকায়ুক্ত অফিসে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরায় হামলার দৃশ্য ধরা পড়েছে। পকেট থেকে ছুরি বার করে আচমকা লোকায়ুক্ত পি বিশ্বনাথ শেট্টিকে পর পর আঘাত করতে দেখা গিয়েছে তেজরাজকে।
লোকায়ুক্তের অফিসে সে সময় আর যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, ঘটনার আকস্মিকতায় তাঁরা প্রথমে হকচকিয়ে যান। তার পরে হামলাকারীকে আটকানো হয়। কিন্তু তত ক্ষণে ছুরি দিয়ে অন্তত পাঁচ বার বিচারপতি শেট্টিকে আঘাত করে ফেলেছে তেজরাজ। রক্তাক্ত অবস্থায় লোকায়ুক্ত লুটিয়ে পড়েছে মেঝেতে।
লোকায়ুক্ত পি বিশ্বনাথ শেট্টির বয়স ৭৪। একের পর এক ছুরিকাঘাতে তিনি গুরুতর জখম হয়েছেন। কিন্তু দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ফলে তিনি এখন সঙ্কটমুক্ত বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে।
যে হাসপাতালে ভর্তি লোকায়ুক্ত, তার সামনে পুলিশি তৎপরতা। ছবি: পিটিআই।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেছেন, ‘‘মনে হচ্ছে লোকায়ুক্তকে খুন করার চেষ্টা হয়েছিল। হামলাকারীর হাতে বড় একটা অস্ত্র ছিল। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও ফাঁক ছিল কি না, আমরা খতিয়ে দেখছি।’’ হামলাকারী সম্পর্কে সব রকম খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। কর্নাটকের পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, হামলাকারীর নামে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মূর্তির উপর হামলায় উদ্বিগ্ন মোদী, কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, টুমকুরের বাসিন্দা তেজরাজ এক সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে লোকায়ুক্তের কাছে একটি অভিযোগ জমা দিয়েছিল। এ দিন সে লোকায়ুক্তের দফতরে যখন ঢোকে, তখন তাকে ঠিক মতো পরীক্ষা করে ঢোকানো হয়নি বলে মনে করা হচ্ছে। লোকায়ুক্তের উপরে হামলা করার জন্যই এ দিন তেজরাজ সেখানে গিয়েছিল বলে পুলিশ মনে করছে।
আরও পড়ুন: নয়া বসত কোথায়, কত দিনের, জানেন না মানিকজায়া
বিজেপি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। খোদ লোকায়ুক্তই যে রাজ্যে নিরাপদ নন, সে রাজ্যে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কতটুকু, প্রশ্ন তোলা হয়েছে বিজেপির তরফে। কংগ্রেস নেতা ব্রিজেশ কলাপ্পার অবশ্য প্রশ্ন, ‘‘লোকায়ুক্তের দফতরে একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে, মেটাল ডিটেক্টর রয়েছে, রক্ষীরা রয়েছেন। এর পরেও কী ভাবে বলা যায় যে নিরাপত্তায় ফাঁক ছিল?’’