মমতার পর জয়ললিতা। আগের দিন পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দূরত্ব কমার ইঙ্গিত দেখা গিয়েছিল। আজদুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্তির পরেই ফের জয়ললিতার সঙ্গে পুরনো সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে তৎপর হলেন নরেন্দ্র মোদী।
আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির মামলায় আজ কর্নাটক হাইকোর্ট থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছেন এডিএমকে নেত্রী। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী পন্নীরসেলভাম এ বার কুর্সি ফিরিয়ে দেবেন ‘আম্মা’কে। সামনের সপ্তাহের গোড়ায় ফের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার ছ’মাসের মধ্যে নির্বাচনে জিতে আসতে হবে জয়ললিতাকে। তামিলনাড়ুতে এমনিতেই সামনের বছর বিধানসভা নির্বাচন। আদালত থেকে রেহাই পাওয়ার পর গোটা রাজ্য জুড়ে যে আবেগ তৈরি হয়েছে, সেই হাওয়ায় নির্বাচন এগিয়েও আনতে পারেন জয়ললিতা। অথবা এক বছর নিজেকে আরও সংগঠিত করে ভোটে যেতে পারেন। এই আবহে বন্ধুত্বে শান দিতে দেরি করলেন না প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির তাবড় নেতারা যখন বুঝে উঠতে পারছিলেন না, জয়ললিতা অব্যাহতি পাওয়ার পর দলের অবস্থান কী হবে, সেই সময় মোদী নিজে টেলিফোনে জয়াকে অভিনন্দন জানিয়ে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন। একে একে সুষমা স্বরাজ, নাজমা হেপতুল্লার মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও তার পর একই পথ ধরলেন।
বিজেপির নেতারা বলছেন, রাজ্যসভার কাঁটা এখনও বিঁধে আছে সরকারের গলায়। বিরোধীদের চাপে জমি এবং পণ্য পরিষেবার মতো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিল এখন কমিটিতে পাঠাতে হচ্ছে। সংসদের পরের অধিবেশনেও জমি বিল পাশ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ফলে শেষ পর্যন্ত যদি যৌথ অধিবেশনের পথেই হাঁটতে হয়, তা হলে জয়ললিতার মতো পুরনো বন্ধুদের সমর্থন প্রয়োজন। এই একই অঙ্কে গত কাল বার্নপুরে মমতার সঙ্গে সৌজন্যের বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে টুঁ শব্দটি করেননি।
তা ছাড়া তামিলনাড়ুতে নিজেদের শক্তি বাড়াতেও গেলেও এখন বিজেপির জয়াকে দরকার। আজকের রায় পরের নির্বাচনে জয়ললিতার জয়কে প্রায় সুনিশ্চিত করে দিল বলেই রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের মত। কারণ জয়া এখন অনায়াসেই বলতে পারবেন, তিনি আগাগোড়াই নির্দোষ ছিলেন, ডিএমকের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। বরং বিরোধী ডিএমকের একাধিক নেতার ঘাড়ে এখনও দুর্নীতির অভিযোগ ঝুলছে। ফলে আজকের পর তামিলনাড়ুতে জয়ললিতার সঙ্গে সখ্য রেখেই চলতে হবে বিজেপিকে।