এ ভাবেই রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছিলেন আনোয়ার আলি।
রক্তে ভেসে যাচ্ছে গোটা শরীর। দুর্ঘটনায় জখম তরুণ কাতরাচ্ছেন রাস্তায় পড়ে। আবেদন করছেন একটু সাহায্যের জন্য। কিন্তু তাঁকে ঘিরে থাকা ভিড়টার মধ্যে থেকে এগিয়ে এল না কোনও সাহায্যের হাত। উল্টে অনেক পথচারী ব্যস্ত রইলেন
মোবাইলে সেই জখম তরুণের ছবি তুলতে! ভিডিও করতে! ৩০ মিনিট পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত্যু হয় সেই তরুণের। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সময়ে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে হয়তো বাঁচানো যেত তরুণকে।
ঘটনাটি কর্নাটকের কোপ্পালের। বুধবার সকালে সাইকেলে করে কাজে যাচ্ছিলেন কোপ্পালের দেবরাজ কলোনির বাসিন্দা ১৮ বছরের আনোয়ার আলি। সেই সময় একটি সরকারি বাস তাঁকে ধাক্কা মারে। কিন্তু রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা আনোয়ারকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বদলে বেশ কিছু পথচারী তাঁর ছবি তুলতে থাকেন। এই দৃশ্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। আধ ঘণ্টা পরে এক পথচারী ছাত্র পুলিশে খবর দেন। চলে আসে অ্যাম্বুল্যান্স। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় আনোয়ারকে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণই মৃত্যুর কারণ।
গত বছরের অগস্টে দিল্লিতেও দুর্ঘটনার পরে দেড় ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে থেকে মৃত্যু হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের বাসিন্দা মহম্মদ মতিবুরের। দিল্লির মতো কোপ্পালের ঘটনাতেও গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে পথচারীদের উদাসীনতার বিষয়টি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা রয়েছে, দুর্ঘটনায় জখম ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কোনও পুলিশি ঝামেলা পোহাতে হবে না। তবু আনোয়ারকে সাহায্য করতে কেউ এগিয়ে এলেন না কেন? এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘এত রক্ত বেরোচ্ছিল যে সকলেই খুব ঘাবড়ে গিয়েছিলেন।’’ কোপ্পালের ঘটনায় একটি মামলা রুজু করেছে ট্রাফিক পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই জায়গাটিতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। তবু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।