শশিকলা নটরাজন। ছবি: সংগৃহীত
ক’দিন আগেই অভিযোগ করেছিলেন, বেঙ্গালুরুর অগ্রহারা জেলে ভিআইপির মতো দিন কাটাচ্ছেন প্রয়াত জয়ললিতার বান্ধবী শশিকলা নটরাজন। তাঁর জন্য অন্য রকম খাবারের বন্দোবস্ত করতে জেলের ভিতরেই বসানো হয়েছে রান্নাঘর। শুধু শশিকলাই নয়, স্ট্যাম্প কেলেঙ্কারিতে ধৃত আবদুল করিম তেলগিকেও রাজকীয় হালে রাখতে যাবতীয় ব্যবস্থা হয়েছে জেলে। আর সেই সব আয়োজনের পিছনে রয়েছে টাকার খেলা। শশিকলার মতো কয়েদিদের থেকে ঘুষ নিয়েছেন উচ্চপদস্থ কারা কর্তারা। কর্নাটকের ডিআইজি (কারা) ডি রূপার সেই অভিযোগ ঘিরে আলোড়ন উঠেছিল দেশজুড়ে। কিন্তু এক সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই মাশুল দিতে হল রূপাকে। সোমবার তাঁকে বদলি করা হয়েছে রাজ্যের পথ সুরক্ষা ও ট্রাফিক-এর কমিশনার পদে।
ঘুষ নিয়ে জেলে শশিকলাকে ভিআইপি-র সুযোগসুবিধা দেওয়ার পিছনে তাঁর উর্ধ্বস্তন অধিকর্তা, রাজ্যের ডিরেক্টর জেনারেল (কারা) এইচ এন সত্যনারায়ণ রাওয়ের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন রূপা। এই সপ্তাহেই কর্নাটক সরকারকে রিপোর্ট জমা দিয়ে অভিযোগ করেছিলেন, ২ কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছেন শশিকলা। রূপার সন্দেহ ছিল, ওই ঘুষের টাকার একাংশ পকেটস্থ করেছেন রাও। সে জন্যই জেলে নিজস্ব রান্নাঘর ছাড়াও অন্যান্য নানা সুযোগ পাচ্ছেন শশিকলা। আজ অবশ্য রূপার সঙ্গে বদলি করে দেওয়া হয়েছে রাওকেও।
জেলের দেওয়ালের ভিতরের কথা বাইরে নিয়ে আসতেই রাজরোষে পড়েন রূপা।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন ডি রূপার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা হবে। কারণ সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলে সার্ভিস রুল ভেঙেছেন তিনি। সেই ইঙ্গিতই আজ বাস্তবে দেখা গেল।
সিদ্দারামাইয়া আজ অবশ্য বলেছেন, ‘‘বদলি হবে নাই বা কেন? এ সব প্রশাসনিক কাজকর্মের অংশ। আর সব কথার জবাব সংবাদমাধ্যমকে দেওয়ার কথাও নয়।’’ যদিও বদলির খবর চাউর হতেই রূপার মন্তব্য, ‘‘বদলির নোটিস এখনও আমার হাতে আসেনি। হাতে এলে কাজ শুরু করব।’’ রাওকে তাঁর অবসরের দিন কয়েক আগেই বদলি করে দেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। শশীকলাকে জেলে কোনও বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়নি।’’ আর রূপা বলছেন, চাকরির কোনও নিয়ম ভাঙেননি তিনি। চলতি মাসের ১০ তারিখে জেল পরিদর্শন করার পরে যে রিপোর্ট বানিয়েছিলেন, তা ফাঁস করেননি। বরং মুখ খোলার জন্য রূপা দায়ী করেছেন সিনিয়র অফিসার রাওকে।
রূপার অভিযোগ, শশিকলার সঙ্গে সাক্ষাতের সময়সূচিও অনেকটাই শিথিল করা হয়েছিল। সন্ধে ৫টার পরও অনেকে হাই প্রোফাইল এই বন্দির সঙ্গে দেখা করতে আসেন অনেকেই। এ বিষয়ে রাও অবশ্য বলেছেন, ‘‘সাক্ষাৎপ্রার্থীদের সময়সীমা নিয়ে আইনকানুন লোহার নিগড়ে বাঁধা নয়।’’