পেশোয়ারের সেই কপূর হাভেলি।
পাকিস্তানের পেশোয়ারে পৃত্থীরাজ কপূর ও রাজ কপূরের জন্মভিটে, ‘কপূর হাভেলি’ ভেঙে ফেলার পরিকল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। বর্তমান মালিক, শহরের সোনা ব্যবসায়ী হাজি মহম্মদ ইসরার চাইছেন, ঐতিহাসিক ভবনটি ভেঙে সেই জায়গায় বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স গড়ে তুলতে।
১৯৪৭-এ দেশভাগের পর পেশোয়ার ছেড়ে ভারতে চলে আসে কপূর পরিবার। তার পর বলিউডের বিখ্যাত ওই পরিবারের স্মৃতিবিজড়িত বাংলোটি স্থানীয় মানুষের গর্বের বিষয় হয়ে উঠেছে ঠিকই, কিন্তু বাড়িটির রক্ষণাবেক্ষণের কাজ একেবারেই হয়নি। ১৯৯০-এ ভাই রণধীরকে নিয়ে ভবনটি দেখতে যান ঋষি কপূর। তারও অনেক পরে, ২০১৮ সালে ঋষিকে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি আশ্বাস দিয়েছিলেন, পৃত্থীরাজ কপূরের বাবা বশেশ্বরনাথ কপূরের তৈরি ভবনটিকে মিউজিয়ামে পরিণত করা হবে। সে কাজ অবশ্য একেবারেই এগোয়নি। বরং স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঐতিহাসিক ভবনটি কার্যত ‘ভূতের বাড়ি’তে পরিণত হয়েছে। ‘কপূর হাভেলি’ যে কোনও মুহূর্তে এমনিতেই ভেঙে পড়তে পারে।
তবে ঋষির অনুরোধের পরে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সরকার মিউজিয়ামে পরিণত করার জন্য বাড়িটিকে কিনতেও চেয়েছিল। বর্তমান মালিক ইসরার এতে আগ্রহ দেখাননি। উল্টে হাভেলি ভেঙে ফেলার জন্য তিনি তিন-চার বার চেষ্টাও চালিয়েছেন বলে খবর। ‘খাইবার পাখতুনখোয়া হেরিটেজ ডিপার্টমেন্ট’ তাঁর নামে এফআইআরও করেছে। জানা গিয়েছে, প্রায় পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের ভবনটির দাম নিয়ে সরকার ও মালিক পক্ষের বনিবনা হয়নি। ইসরার অবশ্য এই বিষয়টি অস্বীকার করছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রয়োজন মেটানোর টাকা আমার রয়েছে। পেশোয়ারের বাজারে প্রতি সপ্তাহে ১২০ থেকে ১৬০ কেজি সোনা সরবরাহ করি আমি।’’
আরও পড়ুন: সোনালি বাঘ! বিশ্বে একমাত্র কাজিরাঙায়
আরও পড়ুন: ভারতে টানাপড়েনের মধ্যে টিকার শেষ পর্যায়ে রাশিয়া
পেশোয়ারের ঢাকি নলবান্দি এলাকায় অবস্থিত কপূর হাভেলির পাশেই বসবাস করেন মুজিবুর রহমান। নব্বইয়ের দশকে ঋষিরা যখন ওই বাড়িটিতে আসেন, মুজিবর তখন কিশোর। আজ তাঁর ক্ষোভ, শহরের গর্ব ‘কপূর হাভেলি’ এত দিন ধরে পড়ে রইল, কোনও রক্ষণাবেক্ষণই হল না। প্রদেশের ‘কালচারাল হেরিটেজ কাউন্সিল’-এর সচিব শাকিল ওয়াজিদুল্লাও ঐতিহাসিক ভবনটির বেহাল অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন।