রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের বাইরে পি চিদম্বরম। সোমবার। ছবি: পিটিআই।
সিবিআইয়ের হেফাজতে তো থাকতেই হচ্ছে, কিন্তু পি চিদম্বরমকে যেন কোনওভাবেই তিহাড় জেলে পাঠানো না হয়। চিদম্বরমের জেল-যাত্রা ঠেকাতে তাঁর আইনজীবী কপিল সিব্বল আজ সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানালেন, ‘‘প্রয়োজনে চিদম্বরমকে গৃহবন্দি করে রাখুন।’’
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পর থেকেই বিরোধী দলের নেতাদের গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তা নিয়ে কংগ্রেস সরব হচ্ছে। কিন্তু প্রবীণ কংগ্রেস নেতা চিদম্বরমের তিহাড়-বাস ঠেকাতে আজ সিব্বল তাঁকে গৃহবন্দি রাখারই আর্জি জানিয়েছেন।
আজ বিকেলে বিশেষ সিবিআই আদালত অবশ্য চিদম্বরমকে আরও একদিনের জন্য সিবিআই হেফাজতে পাঠানোর রায় দিয়েছে। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত একবার সুপ্রিম কোর্ট, একবার রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের মধ্যে পেণ্ডুলামের মতো দুলেছে চিদম্বরমের ভাগ্য। আগামিকালও তার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে।
আইএনএক্স কেলেঙ্কারির মামলায় তাঁকে সিবিআই হেফাজতে পাঠানোর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন চিদম্বরম। আজ তার শুনানি হয়। আবার তৃতীয় দফায় তিন দিনের সিবিআই হেফাজত শেষ হওয়ার পর আজই সিবিআই আদালতে তাঁকে তোলা হয়। সুপ্রিম কোর্টে চিদম্বরমের হয়ে সিব্বল দু’টি দাবি তোলেন। যা শুনে সিবিআইয়ের আইনজীবীরাও চমকে যান। এক, বিশেষ সিবিআই আদালত চিদম্বরমের সিবিআই হেফাজতের পর যদি তাঁকে তিহাড় জেলে পাঠায়, তা হলে সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি নিষ্ফলা হয়ে যাবে। তাই সুপ্রিম কোর্টকেই জামিনের আর্জি শুনতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আর ভানুমতীর বেঞ্চ তাতে রাজি না হওয়ায় সিব্বল দাবি তোলেন, তা হলে সুপ্রিম কোর্টে বৃহস্পতিবারের শুনানি পর্যন্ত তাঁকে গৃহবন্দি করে রাখা হোক। চিদম্বরমের ৭৩ বছর বয়স। দু’সপ্তাহ পরে তাঁর বয়স ৭৪ বছর হতে চলেছে। তাই তাঁকে তিহাড় জেলে পাঠানো চলবে না। যা শুনে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কে এম নটরাজ মন্তব্য করেন, এই আইনে গৃহবন্দি রাখার ব্যবস্থা নেই।
বিচারপতি ভানুমতী মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির আগে রায় দেন, বিশেষ সিবিআই আদালত চিদম্বরমের জামিনের আর্জি খারিজ করে দিলে তিনি সিবিআই হেফাজতে থাকবেন। কিন্তু মধ্যাহ্নভোজনের পরে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টে হাজির হয়ে আপত্তি তোলেন। তাঁর যুক্তি, এই রায়ের অর্থ, চিদম্বরমকে জামিনে মুক্তি দিতে হবে। তিনি প্রস্তাব দেন, মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হোক। সিবিআই আদালতে তাঁরা অতিরিক্ত একদিনের হেফাজত চাইবেন। এর পরের পর্ব রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে। বিশেষ সিবিআই আদালতে চিদম্বরমকে আনা হলে সিব্বল জামিনের আর্জি জানান। মেহতা বলেন, আর্থিক নয়ছয়, বিদেশে টাকা পাচার, বিদেশি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট নিয়ে পাঁচটি দেশের কাছে তথ্য চেয়ে ‘লেটার রোগেটরি’ পাঠানো হয়েছে। চিদম্বরম এই সব তথ্য দেননি। উনি জামিনে মুক্তি পেলে এ ব্যাপারে প্রভাব খাটাতে পারেন।