কঙ্গনা রানাউত ও তাপসী পান্নুর টুইট যুদ্ধ। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
নজিরবিহীন ভাবে টুইটারে তাপসী পান্নুকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করলেন কঙ্গনা রানাউত। তাপসীকে মায়ের নাম করে কটুক্তি করলেন। তুই-তোকারি’ সম্বোধন, ‘কুকুর’, ‘দেশের বোঝা’ কিছুই বলতে বাকি রাখলেন না কঙ্গনা। সমাজ মাধ্যমে কঙ্গনা লিখলেন, ‘তোর মাকে সবার সামনে কু-কথা বললে চুপ করে থাকতে পারবি তো’!
বৃহস্পতিবার সকালে তাপসী একটি টুইট করেন। লেখেন, ‘যদি একটা টুইট তোমাদের একতার ভিতকে এ ভাবে নাড়িয়ে দেয়, সামান্য ঠাট্টা বিশ্বাসের গোড়ায় আঘাত করে, একটা ছবি বা অনুষ্ঠান যদি ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করে, তবে আমার মতে, এখানে সমস্যাটা তোমার। তোমারই উচিত নিজের নীতিবোধের গোড়াটাকে একটু শক্ত করে নেওয়া। যারা এ সব বলছে, তাদের ভুয়ো প্রচারের পুঁথি পড়ানো নয়’।
টুইটে তাপসী যে ‘ঐক্যবদ্ধ ভারত’-এর হ্যাশট্যাগে ভারত সরকারের পক্ষে কথা বলা তারকাদেরই আক্রমণ করেছেন, তা স্পষ্ট। জবাব দিতে দেরি করেননি কঙ্গনাও। দেশের তারকারা কেন আন্তর্জাতিক তারকাদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন, কেনই বা ঐক্যবদ্ধ ভারতের বার্তা দিয়েছেন, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন শাসকদলের সমর্থক বলে পরিচিত কঙ্গনা। যদিও সেই প্রক্রিয়ায় তাপসীকে নজিরবিহীন ভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন তিনি। টুইটে সরাসরি তাপসীকে তাঁর মায়ের নাম করে তোপ দেগেছেন কঙ্গনা। তাপসীকে ‘বোকার হদ্দ’ বলে ‘তুই’ সম্বোধন করে লিখেছেন, ‘তোর মাকে যদি আমি গালাগাল দিই, জাতীয় স্তরের আলোচনা ক্ষেত্রে অপমান করি, তবে কি তোর বিশ্বাসে আঘাত লাগবে বোকারাম? আমি জানি, তখনও তুই নিজের মায়ের প্রতি ভালবাসাকেই দৃঢ় করার চেষ্টা করবি আর মুখে কিছু বলবি না’।
দেশের কৃষক আন্দোলন নিয়ে রিহানা, গ্রেটা থুনবার্গের মতো আন্তর্জাতিক তারকাদের সঙ্গে রীতিমতো টুইট যুদ্ধে নেমেছে মোদী সরকার। তাঁদের বিরুদ্ধ ভারতের একতাকে নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয়েছে। ‘ঐক্যবদ্ধ ভারত’ হ্যাশট্যাগে টুইট করে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের তারকারাও সরকারেরই পাশে দাঁড়িয়েছে। লতা মঙ্গেশকর, সচিন তেণ্ডুলকর, সাইনা নেহাওয়াল, বিরাট কোহালিদের টুইটে বক্তব্য প্রায় এক, ‘ভারতের ব্যাপার ভারত বুঝে নেবে’। কিন্তু তাপসী হেঁটেছেন উল্টো পথে। যে কারণেই কঙ্গনার এই আক্রমণ।
বিরোধিতা করতে গিয়ে তাপসীকে ‘কুকুর’ বলতেও বাধেনি কঙ্গনার। কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে আন্তর্জাতিক তারকাদের নিন্দার মুখে ‘ঐক্যবদ্ধ ভারত’-এর যে ছবি তুলে ধরছে দেশ, তারই সমর্থন করে কঙ্গনা বলেছেন, ‘নিজের দেশ, পরিবার আর বিশ্বাসের জন্য মানুষের সব সময় রুখে দাঁড়ানো উচিত। দেশই আমাদের কর্ম। ধর্মও। তাই এর উপর শুধু বোঝা হয়ে বসে থেকো না। কেন না তা হলে, অন্যের রুটি খেয়ে বেঁচে থাকা পোষ্যের মতোই থেকে যাবে। নতুন কোনও উচ্চতায় পৌঁছতে পারবে না’।
তাপসীকে ওই টুইট নিয়ে আক্রমণ করে কঙ্গনার আরও বক্তব্য, ‘যাঁরা দ্বিতীয় শ্রেণির মানুষ তাঁদের ভাবনা চিন্তাও যে তেমনই হবে এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই’।