সুপ্রিম কোর্টে এ দিন ফের অ্যাটর্নি জেনারেল কড়া পদক্ষেপের পক্ষেই সওয়াল করলেন। (প্রতীকী ছবি)
সুপ্রিম কোর্টে হাজিরা দিলেন না কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সিএস কারনান। আদালত অবমাননার মামলায় আজ, সোমবার সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্ব গঠিত সাত বিচারপতির বেঞ্চের সামনে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল বিচারপতি কারনানের। কিন্তু তিনি হাজির না হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট মামলাটির শুনানি গ্রহণ করেনি। তিন সপ্তাহ পরে ফের শুনানির তারিখ ধার্য হয়েছে। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি এ দিন ফের বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেওয়ার পক্ষে জোর সওয়াল করেছেন।
প্রধান বিচারপতি জেএস খেহরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সিএস কারনানকে নোটিস পাঠিয়ে এ দিন সুপ্রিম কোর্টে হাজিরা দেওয়ার কথা বলেছিল। বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে আদালত তথা বিচারবিভাগের সামগ্রিক অবমাননার অভিযোগ উঠেছে। সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে বিচারপতি কারনানকে সে বিষয়ে নোটিস পাঠায়। ১৩ ফেবারুয়ারি তাঁকে শুনানিতে হাজির হতে বলা হয়।
বিচারপতি সিএস কারনান। —ফাইল চিত্র।
এই নোটিসের প্রেক্ষিতে বিচারপতি কারনান অবশ্য সুপ্রিম কোর্টকে পাল্টা চিঠি পাঠান। রেজিস্ট্রার জেনারেলকে লেখা সেই চিঠিতে বিচারপতি কারনান নিজের বিরুদ্ধে অবিচার তথা বৈষম্যের অভিযোগ তোলেন। সুপ্রিম কোর্টে হাজিরা দেওয়ার যে নির্দেশ তাঁকে দেওয়া হয়েছে, সে প্রসঙ্গে বিচারপতি কারনান লেখেন, তাঁকে সময় দেওয়া হয়নি। তবে তিনি যে আজ হাজিরা দিতে পারবেন না, সে কথা তাঁর চিঠিতে লেখা ছিল না। প্রধান বিচারপতি-সহ সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারপতির বেঞ্চ এ দিন জানিয়েছে, বিচারপতি সিএস কারনানের কেন হাজিরা দিলেন না, তার কারণ তাঁদের জানা নেই। তিন সপ্তাহ পর অর্থাৎ ১০ মার্চ আবার এই মামলার শুনানি হবে বলে আদালত জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: দলিত বলেই নিশানায়, চিঠি বিচারপতির
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কারনান সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মোদীকে একটি চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে তিনি সুপ্রিম কোর্ট ও মাদ্রাজ হাইকোর্টের কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত এবং কর্মরত বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। সেই বিচারপতিদের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার জন্যও বিচারপতি কারনান প্রধানমন্ত্রীকে লেখেন। এই চিঠিকে বিচারবিভাগের অবমাননা হিসেবে ধরা হবে না কেন, সুপ্রিম কোর্টে হাজির হয়ে সে প্রশ্নের জবাব দিতে বিচারপতি কারনানকে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়। বিচারপতি কারনান কিন্তু এ দিন হাজিরা দেননি।
অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি এই মামলার প্রথম শুনানিতেও বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। এ দিনও তিনি সেই অবস্থানেই ছিলেন। বিচারপতি কারনান সুপ্রিম কোর্টের নোটিস পাওয়ার পর যে চিঠি রেজিস্ট্রার জেনারেলকে লিখেছিলেন, তাতে কোথাও লেখা নেই যে তিনি হাজিরা দিতে পারবেন না, মন্তব্য মুকুল রোহতগির। তাঁর সওয়াল, বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে অবিলম্বে চার্জ গঠন করা হোক এবং সেই চার্জের ভিত্তিতে তাঁকে শো-কজ করা হোক।