সি এস কারনান
সুপ্রিম কোর্টে সোমবার হাজির হলেন না কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনান। আদালত অবমাননার একটি মামলায় এ দিন তাঁকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জগদীশ সিংহ খেহরের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ। বিচারপতি কারনান হাজির না হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট মামলার শুনানি তিন সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে। আগামী ১০ মার্চ ওই মামলার পরবর্তী শুনানি। কী কারণে তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল ইস্যু হবে না, তার কারণ দর্শানোর জন্য এ দিন আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বিচারপতি কারনানকে।
সূত্রের খবর, কী কারণে বিচারপতি কারনান এ দিন সুপ্রিম কোর্টে গেলেন না তা তাঁদের জানা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের সদস্যরা। তাঁরা এখন এই মামলার বিচার বন্ধ রাখছেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি কারনানকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে কলকাতা হাইকোর্টের বিচার এবং প্রশাসনিক কাজ থেকে সরিয়ে দেয়। বিচারপতি কারনানের জিম্মায় থাকা বিচার ও প্রশাসনিক বিষয়ের সব ফাইল কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এ দিন মামলাটি উঠলে দেখা যায় বিচারপতি কারনান আদালতে হাজির হননি। তা দেখে অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চকে বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট কাউকে হাজির হতে বললে তা মানা বাধ্যতামূলক।’’ বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে এ দিনই চার্জ গঠনের সওয়ালও করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
বিচারবিভাগে দুর্নীতি নিয়ে কেন্দ্রের নানা দফতরে একাধিক বার চিঠি লিখেছেন বিচারপতি কারনান। তার আগে মাদ্রাজ হাইকোর্ট থেকে কলকাতা হাইকোর্টে নিজের বদলির আদেশ স্থগিত করে শিরোনামে এসেছিলেন তিনি। বিচারবিভাগে দুর্নীতি নিয়ে চিঠির প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছে শীর্ষ আদালত। সেই মামলাতেই প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বিচারপতি কারনানকে আদালতে তলব করে। তার জবাবে বিচারবিভাগে জাতপাতের বিদ্বেষের অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টকে বিস্ফোরক চিঠি লিখেছেন কারনান। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন। সেইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, উচ্চবর্ণের বিচারপতিরা তাঁকে সরানোর চেষ্টা করছেন। এ দিন সওয়ালে ওই চিঠির কথাও উল্লেখ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তাঁর অভিযোগ, এই ধরনের ভঙ্গিতে আগেও চিঠি দিয়েছেন ওই বিচারপতি। অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য, ‘‘তিনি যে আদালতে হাজির হতে পারবেন না, তা-ও ওই বিচারপতি রেজিস্ট্রার জেনারেলকে লেখা চিঠিতে জানাননি।’’