ফাইল ছবি
‘ভাই-বোন এবং পিসি-ভাইপোর দল’, যারা পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির বাইরে ভাবতে ব্যর্থ, তারাই গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শত্রু বলে আজ মন্তব্য করলেন বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা। তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের পরিবারতান্ত্রিক দলগুলি কেবল পরিবারের স্বার্থের কথা ভাবে। দেশের নয়। তাই এদের সঙ্গে বিজেপির লড়াই জারি থাকবে।’’ এ প্রসঙ্গে বিরোধীদের বক্তব্য, গণতন্ত্র-পরিবারতন্ত্রের পরিবর্তে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বরং মন্তব্য করুন বিজেপি সভাপতি। তাতে যদি সরকারের টনক নড়ে। আমজনতার যদি তাতে সুরাহা হয়।
‘পরিবারতান্ত্রিক দলগুলি গণতন্ত্রের বিপদ’ শীর্ষক একটি আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে নড্ডা বলেন, ‘‘কাশ্মীর থেকে তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র থেকে পশ্চিমবঙ্গ— সব রাজ্যেই পরিবারতান্ত্রিক দলগুলি সক্রিয় রয়েছে। কংগ্রেস যেমন ভাই-বোনের দলে পরিণত হয়েছে, তেমনি পশ্চিমবঙ্গে পিসি-ভাইপো সরকার চালাচ্ছে। তামিলনাড়ুতে করুণানিধি পরিবার, তেলঙ্গানাতে কেসিআর-এর পরিবার তেমনই মহারাষ্ট্রে পওয়ার পরিবার রাজত্ব করছে।’’ নড্ডার দাবি, এই দলগুলি আদর্শহীন। কারণ এদের লক্ষ্যই হল যেনতেন ভাবে ক্ষমতা দখল করা। আর তা করতে গিয়ে এরা দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে মেরুকরণের রাজনীতি করতেও পিছপা হয় না। নড্ডার কথায়, ‘‘কোথাও মেরুকরণ হয় জাতের নামে, আবার কোথাও ধর্মের নামে।’’ বিরোধীদের যদিও দাবি, ধর্মের নামে মেরুকরণ সবচেয়ে বেশি বিজেপিই করে।
তবে বর্তমান সময়ে আঞ্চলিক দলগুলি যে ভাবে প্রাধান্য বিস্তার করেছে, তার জন্য কংগ্রেসকে দুষেছেন নড্ডা। তিনি বলেন, গত ষাট বছরে কংগ্রেস বিভিন্ন রাজ্যের দাবিদাওয়া মেটাতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই আঞ্চলিক আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে গিয়ে ওই দলগুলির সৃষ্টি হয়েছে। যা পরে পরিবারবাদী রাজনীতির পৃষ্ঠপোষক হয়ে উঠেছে।
নড্ডার মন্তব্যের সমালোচনা করে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘বিজেপির তো অনেক শীর্ষ নেতা বিয়ে করেননি। তাঁদের পরিবার হবে কী করে! আর নড্ডা রাজ্যসভার সাংসদ। উনি কোনও দিন জনগণের ভোটে জিতে আসেননি। যে পিসি-ভাইপোর কথা তিনি বলছেন, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৫ বছর লোকসভার সাংসদ ছিলেন আর তিন বার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে জিতে এসেছেন। ভাইপো অভিষেকও দু’বারের সাংসদ। দু’জনেই মানুষের ভোটে জিতে এসেছেন। আর একই পরিবারের লোকেরা রাজনীতি করতে পারবেন না এমন কোনও বিধিনিষেধ তো নেই। আসলে মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশ জেরবার। গ্যাসের দামে ভারতের স্থান প্রথমে। তেলের দামেও প্রথম দিকে ভারত। মানুষের চাকরি নেই। অর্থনীতি বেহাল— এ সব থেকে নজর ঘোরাতেই আবোলতাবোল বকছেন বিজেপি সভাপতি।’’