উত্তরকাশীতে চলছে উদ্ধারকার্য। ছবি: পিটিআই।
সারা জীবনের জন্য একটা স্মৃতি রয়ে গেল।
সুড়ঙ্গে আটকে পড়ার পরে প্রথম দু’দিন একটু মন খারাপ হয়েছিল। নানা অনিশ্চয়তা, দুশ্চিন্তা ভিড় করেছিল মনে। তার পরে সব কেটে যায়। সুড়ঙ্গের ভিতরে একমাত্র আমাদের স্নানের বিষয়টা ছাড়া আর কোনও অসুবিধা হয়নি বললেই চলে। খাবার খুব ভাল পেয়েছি। পানীয় জল বেশি করে পাঠানো হত, যাতে অন্তত মাথায়, গায়ে দিয়ে কিছুটা সাফসুতরো থাকতে পারি। গামছা, বাড়তি গেঞ্জি দিদি পাঠিয়ে দিয়েছিল। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা সুড়ঙ্গেই ছিল। সুড়ঙ্গে স্টিলের পাতের সঙ্গে লাগানোর জন্য যে স্পঞ্জ ছিল, তাতে রাতে দিব্যি শোওয়া যাচ্ছিল। ঘুমেরও কোনও সমস্যা হয়নি।
সঙ্গে ছিল গল্পগুজব। দু’দিনের মধ্যে আমাদের তাই মন হালকা হয়ে গিয়েছিল অনেকটা। তবে বাইরে এসে শ্বাস নিতে না পারলে কী হয়!
আমার জামাইবাবু সুরজিৎ বেরা আমার সঙ্গে একই সংস্থায় কাজ করেন। জামাইবাবু সুড়ঙ্গের বাইরে ছিলেন। প্রথম থেকেই রোজ তিনি, সহকর্মী বা বসদের সঙ্গে কথা বলেছি। বাবা-মার খবর পেয়েছি। নিজের খবর দিয়েছি ভয়েস রেকর্ড করে।
তবে, তার মধ্যেই মনে হত, বাবা-মা নিশ্চয়ই খুব চিন্তা করছেন। আমার কথা ভেবে ওদের না শরীর খারাপ হয়, এই ভাবনাই হচ্ছিল! সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে।
এই ক’দিনে আমাদের সুড়ঙ্গবাসে আর একটা কথা বলার মতো। আটকে থাকা শ্রমিকদের সঙ্গে আগে শুধুই পরিচয় বা অল্পবিস্তর বন্ধুত্ব ছিল। এই ক’দিনে সেটা অনেক গাঢ় হয়েছে। একসঙ্গে ব্যায়ামও করেছি। টাওয়ার ছিল না বলে ফোন চলেনি। তবে চার্জার দেওয়া হয়েছিল। সকাল, রাত বুঝতে পারতাম। বেরিয়ে এসে আনন্দ হচ্ছে। সব ভাল যার শেষ ভাল।