ছবি: এএফপি।
গত কালই বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে পাশে নিয়ে নাম না করে পাকিস্তানের মদতপ্রাপ্ত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে স্বর তুলেছিলেন মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি। আর আজ দিল্লি আইআইটি-র অনুষ্ঠানে পাক সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় ‘কঠোর’ হওয়ার ডাক দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, লস্কর বা আল কায়দার মতো সংগঠনগুলির অভয়ারণ্য ধ্বংসে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে পাকিস্তানকে। তবে এই লড়াই যে কারও একার নয়, সে কথা জানিয়ে মার্কিন বিদেশসচিবের বক্তব্য, এ কাজে সকলকেই হাত লাগাতে হবে।
ঘরে-বাইরে একই সঙ্গে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় পাক-নাশকতা রোখার জন্য উদ্যোগী হয়েছে আমেরিকা। তারই সূত্র ধরে গত কাল ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিও করেছে আমেরিকা। এই চুক্তির ফলে এই প্রথম বার বিশেষ পরিস্থিতিতে এক দেশের বাহিনী আর এক দেশের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করতে পারবে। এতে এক দিকে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের সন্ত্রাসের মোকাবিলা ও ভারত মহাসাগরে চিনকে সংযত রাখতে ভারতের সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কাশ্মীরে অশান্তি উস্কে দিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে রীতিমতো রণং দেহি মেজাজে এগোচ্ছে ইসলামাবাদ। আর ঠিক এই সময়ে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের এই সামরিক চুক্তি নিঃসন্দেহে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে একটি বড় ঘটনা বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। প্রায় এক দশক ধরে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা ও যৌথ সামরিক মহড়ার পর এই সামরিক চুক্তিতে আসা সম্ভব হল। এর ফলে শুধু একে অন্যের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহারই নয়, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বিনিময় এবং গবেষণার ক্ষেত্রেও একটি নতুন দরজা খুলে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।
এই চুক্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের আবহ নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে আজ মুখ খোলেন মার্কিন বিদেশসচিব। তাঁর কথায়, ‘‘আমি যখন মার্কিন সরকারের বিদেশনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলাম তখন থেকেই এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, এমনকী এখনকার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও বারবার কথা বলেছি। মোদীকে আমি অবশ্যই কৃতিত্ব দিতে চাই, তিনি শান্তির জন্য চেষ্টা করে গিয়েছেন। নিজের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেও তিনি নওয়াজ শরিফকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।’’ এর পরেই কেরি বলেন, ‘‘পাকিস্তানকে তাদের দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে নির্মূল করার জন্য আরও জোরদার চেষ্টা প্রয়াস করতে হবে। তাদের জন্য যে স্বর্গোদ্যান তৈরি করা হয়েছে তা কোনভাবেই টিকিয়ে রাকা রাখা চলবে না। আফগানিস্তানের শান্তি এবং সুস্থিতির জন্যও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সুসম্পর্ক খুবই প্রয়োজনীয়।’’ পাকিস্তান নিজেও যে সন্ত্রাসবাদের শিকার, সে কথা উল্লেখ করে মার্কিন বিদেশসচিব তাদের সতর্ক করে বলেছেন, ‘‘প্রায় ৫০ হাজার পাক নাগরিক নাশকতার বলি হয়েছেন। যত বারই শান্তির চেষ্টা হয় তত বারই পিছন থেকে টান আসে। ধাপে ধাপে এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে।’’