জেএনইউ-এর প্রথম মহিলা উপাচার্য শান্তিশ্রী ধুলিপুড়ি পণ্ডিত।
অ্যাকাউন্টই নেই! টুইট করা তো দূরের কথা। অথচ সেই তাঁরই বিরুদ্ধে অভিযোগ , তিনি বিতর্কিত টুইট করেছেন। মহাত্মা গাঁধী বিরোধী মন্তব্য করেছেন। এমনকি টুইটারে প্রকাশ্যে গডসেকে সমর্থনও করেছেন, আক্রমণ করেছেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র আন্দোলনকারীদের। ইনি জেএনইউ-এর প্রথম মহিলা উপাচার্য শান্তিশ্রী ধুলিপুড়ি পণ্ডিত। সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত এই উপাচার্য তাঁর বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে জানিয়েছেন, নেট মাধ্যমে কোনও দিনই সক্রিয় ছিলেন না তিনি। তাঁর আদপে কোনও টুইটার অ্যাকাউন্টই নাকি নেই!
ঠিক দু’দিন আগে শান্তিশ্রীকে জেএনইউয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। দেশের অন্যতম নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা উপাচার্যের নিয়োগ নিয়ে প্রথমে প্রশংসা শুরু হলেও অনতিবিলম্বে পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে যায়। শান্তিশ্রী নামে একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা বেশ কিছু টুইট নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। যার একটিতে বেশ স্পষ্ট করেই লেখা হয়েছিল মহাত্মা গাঁধীকে হত্যার নেপথ্যে নিশ্চিত ভাবেই নাথুরাম গডসের যথাযথ যুক্তি ছিল। এমনকি গাঁধীকে হত্যার সিদ্ধান্ত ভারতকে সংযুক্ত করার জন্য জরুরি ছিল বলেও দাবি করা হয় ওই টুইটে। ওই টুইটগুলি উদ্ধৃত করে শান্তিশ্রীর নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। তাঁকে ‘গডসে কে আদর্শ মানা’ সঙ্ঘ পরিবারের সদস্য বলেও মন্তব্য করেন কেউ কেউ।
সমালোচকরা এমনও বলতে শুরু করেন যে, জেএনইউ-এর ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণ করতেই ‘সঙ্ঘের মেয়ে’ কে এনে উপাচার্য পদে বসানো হয়েছে। কারণ শান্তিশ্রীর নামের ওই টুইটার অ্যাকাউন্টের একটি টুইটে ছাত্র আন্দোলনকারীদের স্পষ্টতই মাওবাদী এবং সন্ত্রাসবাদীদের তুলনা টানা হয়েছে। ইংরেজিতে লেখা ওই টুইটের বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘জেএনইউ-এর হেরোগুলো, যারা নিজেদের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে, সেই উগ্রপন্থী মাওবাদীদের ক্যাম্পাস থেকে নিষিদ্ধ কর। জামিয়া মিলিয়া এবং সেন্ট স্টিফেন্সের মতো সাম্প্রদায়িক ক্যাম্পাসগুলোকে আর্থিক সাহায্য করাও বন্ধ করা দরকার।’
২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে করা হয়েছিল ওই টুইট। সেই উত্তপ্ত জেএনইউ ক্যাম্পাস। সঙ্ঘ এবং বিজেপির তরফে বারবার বলা হচ্ছে জেএনইউ সন্ত্রাসবাদী এবং দেশদ্রোহীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। শান্তিশ্রীর নামাঙ্কিত ওই টুইটার অ্যকাউন্ট থেকে বিজেপি-র তথ্য ও প্রযুক্তি সেলের প্রধান অমিত মালব্যর একটি টুইটের জবাবে ওই টুইট করা হয়েছিল। যা তাঁর করা মন্তব্য নয় বলে দাবি করেছেন শান্তিশ্রী। তাঁর দাবি, ওই অ্যাকাউন্টই তাঁর নয়। তিনি কোনওদিনই নেট মাধ্যম সক্রিয় ছিলেন না। তাই কখনও টুইটার অ্যাকাউন্টও ছিল না। তাঁর বিরুদ্ধে মনগড়া কাহিনী বানাতেই ওই অ্যাকাউন্ট পরিকল্পিত ভাবে তৈরি করেছে কেউ।