নিয়োগে অনিয়ম? নির্লিপ্ত জেএনইউ

২০১৬ সালে জেএনইউ-এর উপাচার্য পদে আসেন জগদেশ কুমার। যিনি নিজে বরাবরই সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:০১
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রোমিলা থাপারের মতো আন্তর্জাতিক খাতিসম্পন্ন ইতিহাসবিদের কাছে কাজের খতিয়ান চেয়ে পাঠিয়েছেন। অথচ ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত একাধিক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে গবেষণায় নকল করার অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও মুখপাত্রকে ফোন-মেসেজের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলেও উত্তর আসেনি। তবে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক জানিয়েছে, কোনও শিক্ষাবিদের এমেরিটাস মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হবে না।

Advertisement

২০১৬ সালে জেএনইউ-এর উপাচার্য পদে আসেন জগদেশ কুমার। যিনি নিজে বরাবরই সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। অভিযোগ, তার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে সেন্টারে একের পর এক নিয়মবর্হিভূত নিয়োগ হয়ে চলেছে। কারও বিরুদ্ধে গবেষণাপত্রে অন্যের লেখা থেকে নকল করার অভিযোগ রয়েছে, কারও ক্ষেত্রে নিয়ম না মেনে ইন্টারভিউ হয়েছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জেএনইউটিএ। চলতি বছরের শেষে দিল্লি হাইকোর্ট রায় দেবে বলে আশা করছেন শিক্ষকেরা।

গত তিন বছরে যে অধ্যাপকেরা জেএনইউ-তে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্তত পাঁচ থেকে ছয় জনের বিরুদ্ধে নিজেদের গবেষণাপত্রে টুকলির অভিযোগ উঠেছে। গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে নিয়োগ করা হয় সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ রাজীব মলহোত্রকে। তিনি এবং পলিটিক্যাল জিওগ্রাফি, সমাজবিজ্ঞান, ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ বিভাগে যে সব নতুন নিয়োগ হয়েছে, তাঁদের অনেকেরই বিরুদ্ধে গবেষণাপত্রে টুকলি করার অভিযোগ উঠেছে। যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল অতুল জোহরি ও বুদ্ধ সিংহ নামে দুই শিক্ষকের নামে। এর মধ্যে অতুল জোহরিকে ক্লিন চিট দেয় তদন্তকারী কমিটি। শিক্ষক সংগঠনের সহ-সভাপতি চিরশ্রী দাশগুপ্তের অভিযোগ, ‘‘সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ হলেই আর কারও দোষ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’’ বিষয়টি নিয়ে

Advertisement

সরব হয়েছে জেএনইউয়ের ছাত্র সংগঠনও। তদন্তের দাবিতে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ও ইউজিসি-র দ্বারস্থ হয়েছিল তারা। এখনও কোনও ব্যবস্থা হয়নি।

নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে আর কী অভিযোগ রয়েছে? শিক্ষক সংগঠনের দাবি, এত দিন প্রতিটি বিভাগ বা সেন্টারের পক্ষ থেকে একাধিক ব্যক্তির নাম নিয়োগ কমিটির কাছে পাঠানো হত। কিন্তু গত দু’-তিন বছর ধরে উপাচার্য সেই তালিকায় নিজের পছন্দের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে শুরু করেছেন এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁরাই নিয়োগপত্র পাচ্ছেন।

এক শিক্ষকের অভিযোগ, ‘‘রাশিয়ান সেন্টারের একটি ইন্টারভিউতে এক প্রার্থী সময়ে পৌঁছতে ব্যর্থ হন। বাকিদের ইন্টারভিউ হওয়ার পরে সেই প্রার্থীকে ফোন করে স্কাইপের মাধমে ইন্টারভিউ দিতে বলা হয়। কিন্তু সেই প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়। তখন স্রেফ সেই প্রার্থীর সঙ্গে ফোনে কথা বলে তাঁকে ওই পদের জন্য যোগ্যতম প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেন উপাচার্য।’’ চিরশ্রীর দাবি, ‘‘আগে কোনও বিভাগে প্রবীণতম ব্যক্তিদের যথাক্রমে ডিন ও চেয়ারপার্সন করা হত। এখন অন্য সেন্টারের লোককে ডিন ও চেয়ারপার্সন করা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement