জামাতুল মুজাহিদিন জঙ্গির হদিস এ বার মিলল কাছাড়ের গুমড়ায়।
জবিরুল ইসলাম নামে ওই জঙ্গিকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেল কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স। জেলার পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, নাশকতার পরিকল্পনাতেই বরপেটার জবিরুল ইসলাম ঘরভাড়া নিয়েছিল কাছাড়ে। তবে বরাক উপত্যকায় জঙ্গিহানা হতো কি না, তা স্পষ্ট করেননি কেউই।
কাছাড় জেলায় কাটিগড়া থানা এলাকায় গুমড়া বাজারের বুক চিরে গিয়েছে ৮ নম্বর জাতীয় সড়ক। সেখান থেকে ৮ কিলোমিটার এগোলেই মেঘালয়ের সীমানা। বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত ১০-১১ কিলোমিটার দূরে। এই উপত্যকার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক না থাকলেও মিজোরাম ও মণিপুরের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে মায়ানমারের। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, এমন ভুগোলই পছন্দ সন্ত্রাসবাদীদের। আত্মসমর্পণের পর আলফা নেতারা স্বীকার করেছিলেন, বরাককে করিডর হিসেবে নিয়েই বাংলাদেশে যাতায়াত করা হতো। করিডরের জন্যই কাছাড়ে ধরা পড়ে মণিপুরের জঙ্গিনেতারা। খোঁজ মেলে কয়েক জন মাওবাদী নেতারও।
কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের তৎপরতাতেই তাঁরা মেপে নেন জবিরুলের সন্ত্রাস-উচ্চতা। কাছাড়বাসীর অনেকেরই বক্তব্য, সাধারণ কোনও জঙ্গির জন্য এত পরিকল্পনা করে এ ভাবে হানা দিত না কলকাতা পুলিশের টাস্ক ফোর্স।
এ সব কথা যত ছড়াচ্ছে, তত মানুষ স্তম্ভিত, এত বড় সন্ত্রাসবাদী এত কাছে বসেছিল!
কাছাড়ের পুলিশ সুপার রজবীর সিংহ জানিয়েছেন, জালনোটের কারবারের সূত্র ধরে তদন্ত এগোনোয় স্পষ্ট, জবিরুল ওই পথেই দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল। সেই ষড়যন্ত্রে আর কাদের সামিল করা হয়েছে, তারও খোঁজখবর চলছে। রজবীরের বক্তব্য, বিষয়টিকে তারা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। স্থানীয় পুলিশ তদন্ত করছে, কার ঘর ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। তার সঙ্গে জবিরুলের সম্পর্কের সূত্রও জানার চেষ্টা হচ্ছে। বাকিটা নির্ভর করছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তদন্তের গতিপ্রকৃতির উপর। তাঁরাই জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তবে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে তিনি কথাবার্তা বলে চলেছেন বলে রজবীর জানিয়েছেন।
ঘরভাড়ার ক্ষেত্রে বাড়িমালিকদের রজবীর সতর্ক করে দেন। তিনি বলেন, ‘‘ভাড়াটেদের নাম-ঠিকানা স্থানীয় থানায় জমার কথা কয়েক বছর থেকে বললেও কেউ কানে তুলছেন না। কিন্তু জেনে বা না জেনে এই ধরনের জঙ্গিদের ভাড়া দিলে ঘর মালিকেরও ১০ বছরের জেল হতে পারে।’’
কাটিগড়ার বিধায়ক অমরচাঁদ জৈন বলেন, ‘‘সম্প্রতি গুমড়া বাজারে একটি ১ হাজার টাকার জালনোট ধরা পড়ে। পুলিশকে জানানো হয়েছিল। পুলিশ গুরুত্ব সহ তদন্ত করলে জবিরুল আরও আগেই ধরা পড়ত। এখনও সঠিক তদন্ত হলে জবিরুল-সঙ্গীরা গ্রেফতার হতে পারে।’’